যে যুগ ছিল ধর্মাচারের, নিয়তি নির্ভরতার, চার্চের দুঃশাসনের, যে যুগে বিশপের ন্যূনতম অবাধ্যতার মানে ঈশ্বরদ্রোহিতা, ধর্মগুরুদের অঙ্গুলি হেলনে যে যুগে শিল্পীকে হত্যা করা হতো, কবির গায়ে চামড়া ছিলে উৎসব করা হতো, বিজ্ঞানীকে দেয়া হতো মৃত্যুদণ্ড; সেই যুগে সবকিছু তুচ্ছজ্ঞান করে মাথাচাড়া দিয়ে কৌশলগত বিদ্রোহী হয়ে উঠলেন ইতালির ফ্লোরেন্সের ভিঞ্চি নামের এক শহরতলির বিবাহবহির্ভূত এক তরুণ—লিওনার্দো, আবির্ভূত হলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম শিল্পীদের একজন হিসেবে, পথদ্রষ্টা বৈজ্ঞানিক হিসেবে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব শাখায় কীর্তির ছাপ রাখা ‘রেনেসাঁ মানব’ হিসেবে।
লিওনার্দো
দ্য ভিঞ্চির
৫০০তম মৃত্যুবার্ষিকী
বিশ্বজুড়ে পালিত
হয়েছে চলতি
বছরের ২
মে। লিওনার্দো
দ্য ভিঞ্চিকে
শ্রদ্ধা জানাতে
অতিকায় দ্য
ভিঞ্চি কোলাজের
কয়েকটি টুকরোর
ওপর কেবল
আলোকসম্পাত করা
হচ্ছে।
‘দ্য
ভিঞ্চি’ বললে
তাত্ক্ষণিকভাবে মোনালিসা
ছবিটি সামনে
এলেও বাস্তবতা
হচ্ছে চিকিৎসাশাস্ত্রে
অ্যানাটমি জ্ঞানের
তিনি পথিকৃৎ।
তিনি সেবা
স্থপতি ও
ভাস্করদের একজন,
তার সমকক্ষ
সমরবিজ্ঞানী ও
আবিষ্কারক দ্বিতীয়
কারো নাম
বলা কষ্টকর
হয়ে উঠবে।
তিনি যুগের
সেরা সংগীতশিল্পী
ও বাদক,
তিনি প্রকৌশলী,
ভূতত্ত্ববিদ, মানচিত্রকার,
গণিতবিদ ও
বহু দুর্লভ
আবিষ্কারের প্রণোদনা
তারই সৃষ্টিতে।
তবে তিনি
কি নন,
সেটাও স্পষ্ট
তার সৃষ্টিকর্মে।
‘দ্য লাস্ট
সাপার’-এর
মতো আইকনিক
সৃষ্টি রেখে
যাওয়ার পরও
তিনি ধর্ম
থেকে নিজেকে
বরাবরই সরিয়ে
রেখেছেন। সিস্টিন
চ্যাপেলে তার
দেয়ালচিত্র কিংবা
‘সেন্ট জেরোম
ইন দ্য
ডেজার্ট’ ঈশ্বরের
ও খ্রিস্টের
যত মহিমাই
প্রকাশ করুক,
ভিঞ্চি তার
প্রায় ৭০০
পৃষ্ঠার নোটবুকে
মূলত বিজ্ঞান,
শিল্প-সংস্কৃতি
ও কিছুটা
সাহিত্য নিয়ে
কথা বলেছেন।
মানতে হবে,
চার্চকে এড়িয়ে
যেখানে জীবন
ধারণই সম্ভব
ছিল না,
জীবন-ঝুঁকি
নিয়ে লিওনার্দো
শিল্প ও
বিজ্ঞানের নামে
বিদ্রোহী হয়ে
উঠেছেন। তিনি
গ্রেফতার হয়েছেন,
কারাদণ্ড হয়েছে
তার, প্রাণ
বাজি রেখে
পালিয়েছেন এবং
শেষ পর্যন্ত
লিওনার্দো দ্য
ভিঞ্চি হয়ে
উঠেছেন।
এ রচনায়
লিওনার্দো সম্পর্কে
স্বল্প অবহিত
কয়েকটি বিষয়
কেবল উপস্থাপন
করা হচ্ছে—
মানুষের হৃৎপিন্ড ও ভিঞ্চির আবিষ্কার
লাশকাটা
ঘরে একালের
শিল্পীকে ঠেলে
পাঠানোও মুশকিল
হবে, কিন্তু
দ্য ভিঞ্চি
এই ঘরকে
করে তুলেছেন