ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬ নিহত: থানায় অপমৃত্যু মামলা

বণিক বার্তা অনলাইন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে মন্দবাগ রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। 

আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি শ্যামলকান্তি দাশ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার রাত পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ স্টেশনের আউটার ক্রসিংয়েই আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষে ১৬ জনের প্রাণ যায়, আহত হন অর্ধশতাধিক।

তূর্ণা নিশীথার চালকের গাফিলতিতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার সংকেত দিলেও তূর্ণা নিশীথার চালক তা আমলে নেননি। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তূর্ণা নিশীথার লোকোমোটিভ মাস্টার (চালক) ও সহকারী মাস্টারকে এরই মধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রেলওয়ে স্টেশন, প্রত্যক্ষদর্শী আহত যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৩টার দিকে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা দেয়। মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার জন্য লালবাতি জ্বালিয়ে সংকেত দেন। অন্যদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশপথে স্টেশনমাস্টার তাকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেন।

ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার সময় ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই বিপরীত দিক থেকে আসা তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালান। এ সময় উদয়ন ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগির সঙ্গে তূর্ণা নিশীথার ইঞ্জিনের সংঘর্ষ হয়।  

এ দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন একটি, বাংলাদেশ রেলওয়ে তিনটি এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন, সহকারী চালক অনুপ দেব, পরিচালক (গার্ড) আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

চালক ‘অটোব্রেকে ইট দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন’ বলে যে খবর কয়েকটি গণমাধ্যমে এসেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রেলওয়ের বিভাগীয় পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রধান রেলের বিভাগীয় ট্রাফিক অফিসার নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে চালক ও গার্ডের কারণেই হয়েছে অ্যাকসিডেন্টটা। তদন্ত শেষ হলে এবিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, আউটার ও হোম সিগন্যালে লালবাতি (সতর্ক সংকেত) দেয়া ছিল। কিন্তু তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন