ডিএসইর ভুল তথ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওষুধ খাতের কোম্পানি এসিআই লিমিটেডের চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৯৯ পয়সা। অথচ গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির টাকা ১৯ পয়সা সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়। আর ভুল তথ্যের কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে ভুল সংশোধন করা হলে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে যায়। ফলে যেসব বিনিয়োগকারী প্রথমে ডিএসইর তথ্য দেখে এসিআইয়ের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ডিএসইর ওয়েবসাইটে এসিআইয়ের ইপিএস নিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিষয়ে ডিএসইর কাছে অনেকেই অভিযোগ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুর ১২টা মিনিটে ডিএসই এসিআইয়ের ইপিএসের সংশোধিত তথ্য প্রকাশ করে। আর ঘটনার দায়ে ডিএসইর মাকের্ট অপারেশন্স বিভাগের ইনচার্জ সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাইদ মাহমুদ জুবায়েরকে বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। এক্সচেঞ্জটির মহাব্যবস্থাপক অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের প্রধান শেখ মোহাম্মদউল্লাহকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ডিএসইর সার্ভিল্যান্স বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ কমন সার্ভিস বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল ওয়াহিদ। কমিটিকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে এসিআইয়ের ইপিএস নিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশের প্রভাবে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৩৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ২৭০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। অবশ্য ভুল সংশোধনের পর কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে ২৪২ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে আসে। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল একদিনেই ডিএসইতে এসিআইয়ের লাখ ৭৩ হাজার ২৬১টি শেয়ার লেনদেন হয়, যা দুই বছরের মধ্যে একদিনে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ পরিমাণ শেয়ার লেনদেনের রেকর্ড। এর আগে ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর একদিনে কোম্পানিটির লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনারারি অধ্যাপক . আবু আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে একটি এক্সচেঞ্জ হিসেবে এখানো সেভাবে ডিএসই গড়ে উঠতে পারেনি। এখানে একজন পূর্ণকালীন প্রধান নির্বাহী নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের সক্ষমতা কতটুকু সেটিও দেখা দরকার। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ডিএসইর ভুল তথ্য দেখে যারা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের বিষয়টি কে দেখবে। ঘটনায় অবশ্যই ডিএসইর দায় রয়েছে। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসিকেও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির বিষয়টি দেখতে হবে।

অবশ্য এবারই প্রথম ডিএসইর ওয়েবসাইটে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যসংবেদনশীল তথ্য প্রকাশে ভুল হয়েছে তা নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে ডিএসইর দায় থাকলেও তবে শেষ পর্যন্ত ধরনের ঘটনায় বিনিয়োগকারীদেরই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

ডিএসইর ওয়েবসাইটে স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ মূল্যসংবেদনশীল তথ্য প্রকাশে ভুলের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, ধরনের গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য ভুল হওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। ডিএসই ঘটনায় তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন