ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর গাড়ি আমদানিতে শুল্ক পেছাতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত কয়েকটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইইউর এক কর্মকর্তা মনে করেন, ইইউর গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক পেছানোর বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা দিতে পারেন ট্রাম্প। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।
সোমবার এক ইইউ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমাদের হাতে শক্ত-সুস্পষ্ট ইঙ্গিত এসেছে যে চলতি সপ্তাহে শুল্ক বৃদ্ধি করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
স্নায়ুযুদ্ধকালীন একটি বাণিজ্য নীতির ২৩২ অনুচ্ছেদের বলে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে আমদানীকৃত গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক বৃদ্ধিতে ট্রাম্পের সময়সীমা আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হতে যাচ্ছে।
গত মে মাসে এক ঘোষণায় ইইউ থেকে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক আরোপে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ইইউ থেকে পাল্টা হুমকিতে বলা হয়, ইউরোপের গাড়িতে শুল্ক বাড়ানো হলে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যে তারাও শুল্ক আরোপ করবে।
সোমবার এ বিষয়ে মন্তব্যে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। চলতি মাসের শুরুতে ব্লুমবার্গ টিভিতে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসও শুল্ক স্থগিতের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ইইউ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মার্তাদের সঙ্গে বেশ ভালো আলোচনার কারণে ওই পদক্ষেপ থেকে পেছানোর কথা বলেছিলেন তিনি।
মে মাসে ছয় মাসের জন্য গাড়িতে শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি স্থগিত করেন ট্রাম্প। আবার শুল্ক পেছানো হলে বিশ্বজুড়ে গাড়ি নির্মাতারা হাফ ছেড়ে বাঁচবে।
নিউইয়র্কে ইকোনমিক ক্লাবে আয়োজিত এক বক্তৃতায় গাড়িতে শুল্কের বিষয়টি তুলতে পারেন ট্রাম্প। তবে হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র ইঙ্গিত দেন, কীভাবে তার শুল্ক ও বাণিজ্য নীতির কারণে অর্থনীতি ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বক্তৃতায় তার ওপরই জোর দেবেন ট্রাম্প।
ইইউ কর্মকর্তারা আশা করছেন, গাড়িতে শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি আরো ছয় মাস পিছিয়ে দিতে পারেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের আচরণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তিনি হয়তো ইইউর দিকে শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি ঝুলিয়ে রাখবেন এবং নতুন বছরে বাণিজ্য চুক্তির দিকে আগাতে হতে পারে উভয় পক্ষকে।
ইউরোপীয় এক কূটনীতিক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অনেকবার আলোচনা করেছেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার ও ইইউ কমিশনার সিসিলিয়া ম্যালমস্ট্রম এবং তাদের গলায় ইতিবাচক সুর ছিল।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ ইয়ুঙ্কার এক জার্মান দৈনিককে বলেন, ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করবেন না। ইইউর গাড়িতে ২৫ শতাংশ শুল্কের ফলে আমদানীকৃত ইইউর গাড়ির স্টিকার প্রাইস ১০ হাজার ইউরোতে বা ১১ হাজার ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে করছে ব্রাসেলসভিত্তিক ইউরোপীয় কমিশন।
গত বছর ইউরোপসহ বিদেশ থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে যথাক্রমে ২৫ ও ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে ইইউ নেতাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিলেন ট্রাম্প। বিদেশ থেকে ওই ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাল্টা জবাবে হার্লে ডেভিডসন, মোটরসাইকেল, লেভি স্ট্রসের জিন্স ও বুবর্ন হুইস্কির মতো বিভিন্ন আমেরিকান পণ্যে শুল্ক
বাড়ায় ইইউ।
ইউরোপীয় গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আটলান্টিকের উভয় প্রান্তে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ত। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ইইউর যে পরিমাণ ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি হয়, তার চেয়ে ১০ গুণ গাড়ি আমদানি হয়। পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত রফতানি পণ্যে শুল্ক আরোপ করত ইউরোপ। মেক্সিকো, কানাডা ও জাপানের মতো অন্য গাড়ি নির্মাতা দেশগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক
- ইউএইর পর্যটন খাতে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে ২৪ হাজার
- জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে ব্যর্থ বৈশ্বিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো
- বন্ধ হয়ে গেল ইউরোপের বৃহত্তম গ্যাস ক্ষেত্র
- একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় রাজি নন জর্জিও আরমানি
- সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যে
- প্রধান কয়েকটি বাজারে মূল্য কমিয়েছে টেসলা