আমাদের আমানত নিরাপদ তো?

ড. আর এম দেবনাথ

ব্যাংক সম্পর্কে মানুষের অনেক প্রশ্ন। অনেক সমালোচনা। সমালোচনা বেসরকারি মালিকদের বিরুদ্ধে। সমালোচনা ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে। একসময়ের সততার প্রতীক ব্যাংকাররাও সাধারণ মানুষের সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা তো আছেই। এসব আলোচনা সমালোচনার ভেতরেই লুক্কায়িত একটি প্রশ্ন, আমাদের আমানত নিরাপদ তো? ব্যাংকে টাকা গচ্ছিত রাখা নিরাপদ তো? গচ্ছিত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে তো? নানা সন্দেহ অনেকের মনে। প্রশ্ন সন্দেহ বেড়েছেপিপলস লিজিং  কোম্পানিটি অবসায়নে যাওয়ার পর। এখানেও দেখা যাচ্ছে মানুষব্যাংকলিজিং  কোম্পানি মধ্যকার তফাত সম্পর্কে অনেক ক্ষেত্রে জ্ঞাত নয়। দেখা যায়, যখনই কাগজে একটা নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হয় তখনই মানুষের মনের সুপ্ত প্রশ্নটি আবার জেগে ওঠে। আমি এটা হাড়ে হাড়ে টের পাই। কারণ দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক কলাম লিখি। অনেকের ধারণা, আমি এর সদুত্তর দিতে পারব। কেউ বুঝতে চায় না যে কলাম লেখা আর ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা বোঝা এক বিষয় নয়। একটি তরুণ স্বাস্থ্যবান যুবক হঠাৎ রাস্তায় পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারে। তেমনি দৃশ্যত স্বাস্থ্যবান ব্যাংক হঠাৎ লুটিয়ে পড়তে পারে এবং এর অনেক কারণ আছে। ব্যাংক চলে কতগুলো অনুমানের ওপর। কিছু লোক প্রতিদিন তাদের সঞ্চিত টাকা ব্যাংকে জমা করতে আসবে, আবার কিছু লোক তাদের জমাকৃত টাকা তুলতে আসবে। এর মধ্যে জমাটা বেশি হবে, তোলা হবে কম। অতএব, ব্যাংক চলবে, তার হাতে টাকা থাকবে। সেই টাকা ধার দেয়া হবে। এখন যদি কোনো গুজবের কারণে সব আমানতকারী একসঙ্গে আসেন টাকার জন্য, তাহলে কোনো ব্যাংকের পক্ষেই টিকে থাকা সম্ভব নয়। সম্ভব অনেক সময় করা হয়। আর সেটা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্যই তার নামলেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট’—দুর্দিনের বন্ধু। তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ব্যাংক যাবে অবসায়নে। অবসায়ন কাজ তদারক করবে আদালত কর্তৃক মনোনীত লিকুইডেটর। তিনিলাল বাতিজ্বালানো ব্যাংকের পাওনা টাকা তুলবেন এবং আনুপাতিক হারে ওই টাকা দেনাদারদের মধ্যে বণ্টন করবেন। এর নিয়মনীতি আছে, সব ব্যাংকই আজ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। এসব ব্যাংক ইচ্ছা করলেই প্রতিষ্ঠা করা যায় না, ইচ্ছা করলে এরা টাকা মেরে উধাও হতে পারে না। জন্ম মৃত্যু আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিটি ধাপে জড়িত। ফাঁকিবাজির সুযোগ নেই। এজন্যই বলা যায় ব্যাংক ব্যবসা হলো সবচেয়ে বেশিরেগুলেটেড বিজনেস তবে এর মধ্যেও নানা কারণে দুর্ঘটনা ঘটে এবং দেশেই অতীতে ঘটেছে। যেমন আজকের ইস্টার্ন ব্যাংক। এটি সাবেক বিসিসিআই ব্যাংক। আন্তর্জাতিকভাবে প্রতারণার কারণে এটি বন্ধ হয়। সৃষ্টি হয় ইস্টার্ন ব্যাংক বেসিক ব্যাংক। সবই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে। একটা পুনর্গঠন কাঠামোর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিসিসিআইকে অবসায়নে পাঠিয়ে ইস্টার্ন ব্যাংক বেসিক ব্যাংক তৈরি করে। এতে কোনো আমানতকারী তাদের জমা টাকা খুইয়েছেন বলে শুনিনি। কালাতিপাত করতে হলেও সবাই টাকা, ব্যাংকের শেয়ার পেয়েছেন। যারা শেয়ার পেয়েছেন তারা পরে বিক্রি করে লাভবানও হয়েছেন। উদাহরণ রয়েছে বিসিআই এনসিএল নামের দুটো বিনিয়োগ কোম্পানির। বেআইনিভাবে চেক ব্যবহার করে দুটো প্রতিষ্ঠান ধরা পড়ে। মালিকরা অনেক টাকা মেরে দেন। সরকার এগুলোকে দুটি ব্যাংকে রূপান্তর করে দেয়একটি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড এবং অন্যটি এনসিসিবিএল। এতেও কেউ টাকা খুইয়েছেন বলে শুনিনি। সময় লেগেছে কিন্তু পেয়েছেন। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা দুটো এক করে তৈরি হয়েছে বিডিবিএল। আমানতকারীদের টাকা ঠিকই আছে। এই

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন