জয়পুরহাটে আলু আবাদের লক্ষ্য ৩৮ হাজার হেক্টর

বণিক বার্তা প্রতিনিধি জয়পুরহাট

 দেরি হলেও জয়পুরহাটে পুরোদমে শুরু হয়েছে আলু আবাদ। এবার জেলাটিতে ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টিপাত ও ধানের কারণে আলু আবাদ শুরুতে দেরি হলেও লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয় নেই।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাটে সবসময় স্থানীয় চাহিদার চেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়। ফলন ভালো হওয়ায় এ জেলায় গ্যানোলা, মিউজিকা, ডায়মন্ড, এস্টোরিকস, কার্ডিনাল ও রোজেটা জাতের আলু বেশি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। গত মৌসুমে এ জেলায় ৩৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে আবাদ হয় ৪২ হাজার ৫৩০ হেক্টর। এ থেকে আলু উৎপাদন হয়েছিল ৮ লাখ ১৫ হাজার টন। এবার ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮০০, পাঁচবিবি উপজেলায় ৬ হাজার ৮১৭, ক্ষেতলালে ৮ হাজার ৫০০, কালাইয়ে ১০ হাজার ৮০০ ও আক্কেলপুরে ৫ হাজার হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ টন। এবার হেক্টরপ্রতি আলুর ফলন ধরা হয়েছে ২৫ দশমিক ৭ টন। আলু চাষের জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ২ হাজার ৯৫০ টন বীজ কৃষকদের কাছে সরবরাহ করবে। গত মৌসুমে সরকারিভাবে ১ হাজার ৮০০ টন আলুবীজ সরবরাহ করা হয়েছিল। এছাড়া জেলায় সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।

কৃষকরা জানান, অসময় বৃষ্টিপাত ও আমন ধান কাটতে দেরি হওয়ায় এবার আলু আবাদ শুরুতে দেরি হয়েছে। তবে এখনো হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকায় আলু আবাদে কোনো সমস্যা হবে না। তবে অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

পাঁচবিবির আলুচাষী কুতুবুল আলম বলেন, সরকারিভাবে ধান কেনার মতো আলুর ন্যায্য দাম নিশ্চিতে ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। এতে আমাদের বাজার নিয়ে চিন্তায় থাকতে হতো না।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ায় জয়পুরহাট থেকে আলু অন্যান্য জেলার পাশাপাশি মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, নেপাল, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়। জেলায় ১৫টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারে দেড় লাখ টন সংরক্ষণ করা যায়। এছাড়া আলুর চাহিদা বাড়াতে বহুমুখী ব্যবহারে জোর দেয়া হচ্ছে।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায় জানান, জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের আলুবীজ সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করি, এবারো আবাদ লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন