জলমগ্ন সড়কে ‘বিচ্ছিন্ন’ জনপদ নওগাঁর দুবলহাটি-ভীমপুর

বণিক বার্তা প্রতিনিধি নওগাঁ

 নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি থেকে ভীমপুরের দূরত্ব প্রায় ছয় কিলোমিটার। বিল এলাকার এ পথ পাড়ি দিতে যে গ্রামীণ সড়কটি রয়েছে, সেটি জলমগ্ন থাকে বছরের চার মাসেরও বেশি সময়। ফলে শুকনো মৌসুমে কাঁচা এ সড়ক দিয়ে কোনোমতে চলাচল করা গেলেও বর্ষায় আর উপায় থাকে না। তখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া স্থানীয় কালীপুর, সুনুলিয়া, হাতাস, মধ্যহাতাস, প্রতাবদহ, চোয়ারাপাড়া ও শশিধরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলে একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে নৌকা।

স্থানীয়রা জানান, নওগাঁ সদরের আরজি-নওগাঁ শাহি মসজিদ থেকে হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের ভীমপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত গ্রামীণ সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার। এর মধ্যে উঁচু করে সাড়ে ছয় কিলোমিটার পাকাকরণ হয় ৮-১০ বছর আগে। কিন্তু দুবলহাটি বাজার থেকে ভীমপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত বাকি ছয় কিলোমিটার কাঁচাই থেকে যায়। ফলে প্রতি বছরই বর্ষার সময় সড়কের এ অংশ পানিতে ডুবে থাকে। সংযোগ সড়কের অভাবে কাজে আসে না ভীমপুর থেকে হাতাস গ্রাম পর্যন্ত নির্মিত চারটি সেতু। এ অবস্থায় কেউ দুবলহাটি বাজার থেকে হাঁসাইগাড়ী বিল ও কাটখৈর বাজার হয়ে চলে যাওয়া পাকা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে চাইলে তাকে অতিরিক্ত ঘুরতে হয় প্রায় নয় কিলোমিটার পথ। এ পথে কৃষিপণ্য পরিবহনে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যায় কয়েক গুণ। অন্যদিকে নৌকায় করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের।

স্থানীয়দের দাবি, বর্ষায় দ্বীপে পরিণত হওয়া এসব গ্রামের মানুষের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে দুবলহাটি-ভীমপুরের ছয় কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হোক। এ অংশ পাকা হলে সদর, মান্দা ও মহাদেবপুরের আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, রাস্তাটির বাকি অংশ পাকা হলে বোরো মৌসুমে দ্রুত বোরো ধান সংগ্রহ করা যেত। সুবিধা হতো ফসল আবাদ ও পরিচর্যায়। শুধু যোগাযোগের এ বিড়ম্বনার কারণে ফসল আবাদে তাদের নানা অসুবিধা হচ্ছে।

ভীমপুর গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান সরদার বলেন, বারোমাসা বিলে তার ১২ বিঘা জমি আছে। প্রতি বছরই তিনি এখানে ধানের আবাদ করেন। তবে বিপাকে পড়েন বর্ষার সময়। তখন ধান কাটা ও দ্রুত জমি থেকে ঘরে তুলতে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কারণ নৌকায় অনেক ধান একবারে পরিবহন করা যায় না। কিন্তু রাস্তা থাকলে সহজে এ কাজ করা যেত।

একই গ্রামের এসএম জালাল হোসেন পিন্টু বলেন, এ রাস্তাটি পুরোপুরি পাকা হলে জেলা শহরের সঙ্গে দূরত্ব অনেক কমে যাবে। উপকৃত হবেন এলাকার কয়েক হাজার বোরো চাষী।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) প্রকৌশলী ইমতিয়াজ জাহিরুল হক বলেন, রাস্তাটির জন্য এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসার পর রাস্তাটি পাকাকরণ হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই রাস্তাটি এলাকাবাসীর জন্য খুবই জরুরি। বিশেষ করে রাস্তাটি হলে এলাকার কৃষিকাজের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। আমরা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য আলোচনা করেছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন