সম্পদে সমগ্র মার্কিন মধ্যবিত্তকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ১% অতিধনী

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যে, মাত্র ১ শতাংশ ধনী মার্কিনির হাতে এ পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, যা দেশটির মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তের মোট সম্পদের কাছাকাছি। এছাড়া শীর্ষ ১০ ভাগের কাছে অধিক গৃহস্থালি/খানা সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সর্বশেষ প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, গত এক দশকে শেয়ারবাজারে বেশ ভালো মুনাফা করেছে ১ শতাংশ মার্কিনি। এতে সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির অর্ধেকেরও বেশি শেয়ার বর্তমানে তাদের হাতে। দেশটির অর্থনৈতিক প্রতিপত্তির বড় ভাগেই নিয়ন্ত্রণ ক্ষুদ্র এ অংশটির।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের এই ১ শতাংশ অতি ধনীদের হাতে মোট সম্পদের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদশালীর তালিকায় ৫০ থেকে ৯০-এর কোটায় থাকা মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তের সম্পদের পরিমাণ ৩৬ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার। বৃহৎ বিনিয়োগকারীদের সহায়তাকারী আটলান্টাভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান লেকভিউ ক্যাপিটাল পার্টনার্সের চিফ মার্কেট স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিফেন কোলাভিটো বলেন, বিত্তশালীদের সম্পদ বৃদ্ধির পেছনে সুদ থেকে প্রাপ্ত অর্থের ভূমিকা খুবই নগণ্য ছিল। ব্যাংকে অর্থ সঞ্চয় বা অন্যান্য নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগ থেকে ভালো লাভ পাওয়া যায় না। এ কারণে তারা শেয়ারবাজারে তাদের অর্থ বিনিয়োগ করেছে। অন্যদিকে অতি ধনীরা হেজ ফান্ড ও প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন। এতে বাজারের আকার আরো ফুলেফেঁপে উঠেছে। এ রকম বেশির ভাগ ফান্ডে বিনিয়োগের যোগ্য হতে হলে ন্যূনতম ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করতে হয়। অধিক সুযোগের কারণে সম্পদশালীরা আরো সম্পদের মালিক হচ্ছে।

বর্তমানে ১ শতাংশ আমেরিকানের মোট সম্পদ মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তের সম্পদ ছুঁই ছুঁই করলেও তাদেরকে ছাড়িয়ে যেতে বেশি দিন বাকি নেই। ২০১৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিত্তশালী আমেরিকানদের খানা সম্পদের পরিমাণ ৬৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে সম্পদের দিক থেকে ৫০ থেকে ৯০-এর কোটায় থাকা আমেরিকানের খানা সম্পদ বেড়েছে ২১ হাজার কোটি ডলার।

সর্বশেষ ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস ডাটায় দেখা গেছে, শীর্ষ ১ শতাংশ মার্কিনির আয়সীমা ২০১৭ সালে শুরু হয়েছে ৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৭১ ডলার থেকে। তবে এখন পর্যন্ত শীর্ষ ৯০ থেকে ৯৯-এর কোটায় থাকা মার্কিনিদের হাতেই সম্পদের বেশির ভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ। এ নয় ভাগ মার্কিনির সম্পদের পরিমাণ ৪২ দশমিক ৬০ ট্রিলিয়ন ডলার।

প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে আছে নিচের দিকে থাকা ৫০ শতাংশ মার্কিনি। যুক্তরাষ্ট্রে ওই খানাগুলোর লায়াবিলিটিজ ৩৫ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং তাদের সম্পদ মোট সম্পদের মাত্র ৬ দশমিক ১০ শতাংশ।

সম্পদের ক্ষেত্রে বয়সেরও ভূমিকা রয়েছে। তরুণদের একটি অংশ বয়স্ক মার্কিনিদের তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকেওকে বুমার হিসেবে চিহ্নিত করে। তবে শেষ হাসি কিন্তু বেবি বুমারদের জন্যই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া ব্যক্তিদের হাতে যে সম্পদ রয়েছে, মিলিয়নেয়ারদের থেকে তা ১১ গুণ বেশি। ফেড বলছে, বর্তমানে যাদের বয়স ৫৫ কিংবা তারও উপরে, তাদের হাতে যে সম্পদ রয়েছে, তা পরবর্তী প্রজন্মের আমেরিকানদের সম্পদের তুলনায় তিন গুণ বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন