ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় গতকাল সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম। সেই সঙ্গে বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপত্সংকেত জারি করার পরই ধাপে ধাপে বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। চট্টগ্রাম বন্দর জেটি থেকে ১৮টি জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বন্দর চত্বর থেকে পণ্য খালাসও বন্ধ করে দেয়া হয়।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সভা শেষে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ জানান, পরিচালন কার্যক্রম বন্ধ করে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেয়া হয়েছে। সব জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আবার উপকূলের কাছাকাছি থাকা জাহাজগুলো কক্সবাজারের দিকে গভীর সাগরে নেয়া হয়েছে। বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্য বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, তা নিয়ে বন্দরের একটি কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। ১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেতের ভিত্তিতে চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-১’ জারি করে। ৪ নম্বর সংকেতের জন্য বন্দর অ্যালার্ট-২ জারি করে। এ ছাড়া বিপত্সংকেত ৫, ৬ ও ৭ নম্বরের জন্য ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়। মহাবিপত্সংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-৪’ জারি করা হয়। তখন বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জেটি, যন্ত্রপাতি ও পণ্যের সুরক্ষার জন্য ১৯৯২ সাল থেকে এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বন্দর সচিব ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, জাহাজ, জেটি ও যন্ত্রপাতি সুরক্ষা করতে সব ধরনের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণকক্ষও খোলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যায়, সেজন্য বন্দরের প্রস্তুতি আছে।