আরসিইপি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে মনোযোগী ভারত

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসিইপি) অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ভারত। এবার দেশটির সরকার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছতে চেষ্টা করছে। অনেক বিশ্লেষক ভারতের এমন পরিকল্পনাকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ভারতের বাণিজ্য শিল্পমন্ত্রী পীয়ূষ গয়াল বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা করছে ভারত। কারণ এসব বৃহত্তর উন্নত বাজারে প্রবেশ করতে পারলে ভারতের শিল্প সেবা খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সুবিধা বাড়বে। 

কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি এড়িয়ে আসছে ভারত এবং কয়েক মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ব্যাপারে ইঙ্গিত দিলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

তবে গয়াল জানিয়েছেন, এমন চুক্তির বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো তাড়াহুড়ো নেই এবং একমাত্র নিজ স্বার্থ সুরক্ষিত হলেই বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে তারা।

এই বিবৃতি এমন সময় এল, যখন ভারত যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট ফাটল মেরামতের চেষ্টা করছে। হার্লি-ডেভিডসন থেকে শুরু করে ফলমূলের ওপর আরোপ করা উচ্চতর শুল্ক জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যবধান তৈরি হয়েছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা যায় কিনা, তা আমাদের খতিয়ে দেখা উচিত। দেশটির সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, পুরো জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে চাপ দিচ্ছে ভারত, যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত আংশিক সুবিধা দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।

বাণিজ্য নিয়ে বিবাদ বাড়লেও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনা পণ্যে স্থানীয় বাজার সয়লাব হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কায় আরসিইপি থেকে সরে এসেছে ভারত। এমন সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি দেশটির সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে যেমন প্রতিফলিত করবে, তেমনি সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করবে।

অতীতে ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরামের মতো লবি গ্রুপগুলো জানিয়েছিল, দুই দেশের মধ্যকার বিবাদ মেটাতে এফটিএ মূল ভূমিকা রাখতে পারে। 

আরসিইপি থেকে সরে আসা ভারতের জন্য কঠিন একটি সিদ্ধান্ত ছিল এবং কয়েক মাস ধরে সরকারের উচ্চপর্যায়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। একেবারে শেষ মুহূর্তে চুক্তি থেকে ভারতের সরে আসা অঞ্চলটির জন্য ইতিবাচক কোনো ইঙ্গিত ছিল না। উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে এমন আচরণ ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির ওপর  বিরূপ প্রভাব ফেলবে। 

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিতেও যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন নিয়ম আরোপ করতে চায়, যার ফলে সরকারগুলোর জন্য অগ্রাধিকারমূলক সেবা দেয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।

ভারত সবসময় নিজেদের সফটওয়্যার অন্যান্য পেশার জন্য সুবিধা চায়, যার বিনিময়ে আমদানি শুল্ক হ্রাস অন্যান্য ছাড় দিয়ে নিজেদের বাজার উন্মুক্ত করতে রাজি হয়েছে দেশটি। কিন্তু ভিসার সংবেদনশীলতা আমলে নিয়ে এটা বলা যায় যে যুক্তরাষ্ট্র এইচ-ওয়ানবি বা অন্য কোনো নিয়ম শিথিল করবে না, অথচ ভারতীয় কর্মকর্তা এসব নিয়মে ছাড় চান। একটি সূত্র বলছে যে প্রতিটি দেশের সংবেদনশীলতা রয়েছে, যেটাকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার। ২০১৮-১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির আমদানি-রফতানির পরিমাণ ছিল হাজার ৮০০ কোটি ডলার। হাজার ২৪০ কোটি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন