কর্মসংস্থান সংকটে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া

প্রতি বছর লাখ লাখ তরুণ দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু তাদের অনেকেরই কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। অঞ্চলের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে সম্প্রতি ডয়েচে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন ইউনাইটেড নেশনস চিলড্রেনস ফান্ডের (ইউনিসেফ) নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর। নিচে সাক্ষাত্কারের সংক্ষিপ্ত অংশ তুলে ধরা হলো

ইউনিসেফের প্রাক্কলন অনুসারে, প্রতিদিন প্রায় এক লাখ দক্ষিণ এশীয় শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে এবং তাদের প্রায় অর্ধেকেরই কাজ খোঁজার মতো প্রয়োজনীয় দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মতামত কী?

এটি হতবাক করে দেয়ার মতো একটি সংখ্যা। দক্ষিণ এশিয়া কর্মসংস্থান সংকটে পড়েছে। আমাদের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, অঞ্চলের ৫৪ শতাংশ তরুণের ভালো কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই।

এর অর্থ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়বে, বহু নারী পুরুষ অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখার কোনো সুযোগ পাবে না। অবস্থা পরিবর্তনে আমাদের চেষ্টা করা প্রয়োজন এবং শিক্ষার স্তর তরুণ জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।

এসব তরুণের জন্য একটি ভালো বেতনের কর্মসংস্থান খোঁজা অঞ্চলের নীতিনির্ধারকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। তবে এর জন্য স্কুলসহ শিক্ষা ব্যবস্থার, যেখানে শিশুরা তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা শিখছে না, সংস্কার প্রয়োজন।

আমরা যদি সমস্যা সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করি, তবে প্রজন্মকে ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেব।

ভারত সরকার ৪০ কোটিরও বেশি মানুষকে প্রশিক্ষিত দক্ষ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রকল্পকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

স্কিল ইন্ডিয়া স্টার্টআপ ইন্ডিয়া দুটিই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এগুলো কেবল একটি সূচনা। ভারত তার শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেয়ার মাধ্যমে সঠিক পথেই রয়েছে।

তরুণ জনগোষ্ঠী ব্যাপক উদ্বেগ হতাশার সম্মুখীন হচ্ছে, বিশেষ করে তারা স্কুলে কী শিখছে সে প্রশ্নটি যখন উঠে আসে। আমাদের এই বিষয়টি পরিবর্তন করতে হবে। তাদের অনেকেই কাজ খোঁজা নিয়ে সমস্যায় পড়ে। ফলে আমাদের প্রত্যেক তরুণের কাছে পৌঁছতে হবে এবং কর্মজীবনসংক্রান্ত পরামর্শ চাকরি খুঁজতে তাদের সহায়তা করতে হবে।

শ্রমবাজারের জন্য তরুণদের প্রস্তুত করতে দক্ষিণ এশিয়ার সরকারগুলোর কী করা প্রয়োজন?

অঞ্চলে প্রতি বছর লাখ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। কেবল ভারতেই তরুণদের শ্রমবাজারে আত্মীকরণ করতে প্রতি মাসে ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা প্রয়োজন। যা ভারত সরকারের জন্য বিশাল একটি চ্যালেঞ্জ।

আমরা যদি তাদের ভালো শিক্ষা দক্ষতা দিতে পারি, তাহলে সত্যি তাদের সহায়তা করা হবে। সরকারগুলোর শৈশবকালীন শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত। পাঁচ বছর বয়সের আগে শিশুদের মস্তিষ্ক শরীর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আর সময়ের শিক্ষাই তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। প্রক্রিয়া যদি প্রাথমিক মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত টিকে থাকে এবং উপযুক্ত দক্ষতা শেখানো হয়, তবে তারা সমাজের উৎপাদনশীল সদস্যে পরিণত হবে।

সরকার যদি সমস্যাগুলোর দিকে যথেষ্ট মনোযোগ না দেয় তবে কী হবে?

এগুলো উপেক্ষা করা হলে, অঞ্চলের উৎপাদনশীলতা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পতন ঘটবে। যদি কেবল অর্ধেক তরুণ জনগোষ্ঠীর কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকে, তবে কেবল অর্ধেক তরুণই সমাজের উৎপাদনশীল অর্থনৈতিক খাতে অবদান রাখতে সক্ষম সদস্যে পরিণত হবে। জনসংখ্যার অর্ধেকেরই যদি পড়া, লেখা অংক কষার দক্ষতার ঘাটতি থাকে, তবে কোনো দেশই অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন