সংকটে জর্জরিত জার্মানির শীর্ষ বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডয়েচে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর পাশাপাশি বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন ক্রিস্টিয়ান সুইং। কিন্তু তার এ দ্বৈত ভূমিকা প্রতিষ্ঠানটির আমূল পুনর্গঠন পরিকল্পনা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে কারণে সুইংকে তার দ্বৈত দায়িত্ব থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ও জার্মানির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ফিন্যান্সিয়াল সুপারভাইজরি অথরিটি (বাফিন নামে পরিচিত) আগামী এক বা দুই বছরের মধ্যে পদ দুটি পৃথক করে সুইংয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চাইছে বলে অভ্যন্তরীণ আলোচনা সম্পর্কে অবগত তিনজন জানিয়েছেন।
এছাড়া দুটি ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য স্বার্থগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে বলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে। কারণ প্রধান নির্বাহী যেখানে বিচক্ষণতার সঙ্গে ঝুঁকি গ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করেন, সেখানে শীর্ষ বিনিয়োগ ব্যাংকারকে ধরা হয় ঝুঁকি সৃষ্টিকারী হিসেবে। বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি তথ্য রয়েছে এমন এক জ্যেষ্ঠ সুপারভাইজর জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সুইংয়ের এ দ্বৈত ভূমিকা পালনকে স্থায়ী সমাধান নয়, বরং একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে দেখছে।
ডয়েচে ব্যাংকের চারটি বৃহৎ অংশীদারও ক্রিস্টিয়ান সুইংয়ের দ্বৈত ভূমিকাকে স্বল্পমেয়াদের জন্য একটি ভালো সমাধান হিসেবে বিবেচনা করলেও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পর্ষদে অভিজ্ঞ বিনিয়োগ ব্যাংক বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বলে জোর দিয়েছে।
এক বিনিয়োগকারী সতর্ক করে জানিয়েছেন, সুইং অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পক্ষে অংশীদার ও সুপারভাইজারদের সন্তুষ্ট করার মতো পর্যাপ্ত দৃঢ়তার সঙ্গে পুরো ব্যাংক পরিচালনা ও বিনিয়োগ ব্যাংকের তদারক করা সম্ভব হবে না।
২০১৮ সালের এপ্রিলে ডয়েচে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সুইং। পরে জুলাইয়ে সমস্যা-জর্জরিত বিনিয়োগ ব্যাংকের তদারকি ভার গ্রহণ করেন। একই মাসে গার্থি রিচির স্থলে বিনিয়োগ ব্যাংকিং প্রধান হিসেবে মার্ক ফেডোরিককে দায়িত্ব দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে সুইংই প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফেডোরিক ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সদস্য নন এবং তাকে সুইংয়ের কাছে রিপোর্ট করতে হয়। ফিক্সড ইনকাম সেল ও ট্রেডিংয়ের প্রধান রাম নায়েকও সুইংয়ের কাছে রিপোর্ট করেন।