গেল ২৭ অক্টোবর ইসলামিক স্টেট গ্রুপের পলাতক নেতা আবু বকর আল-বাগদাদীকে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ ঘোষণার আট দিন পর নতুন খবর দিল তুরস্ক। জঙ্গিগোষ্ঠীর এই নেতার বোনকে তুরস্কের সামরিক বাহিনী আটক করেছে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন তুরস্কের কমিউনিকেশন্স ডিরেক্টর ফাহরেতিন আলতুন।
আটককৃত ওই নারীর নাম রাসমিয়া আবাদ (৬৫)। এসময় তার স্বামী ও ছেলেকেও আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন তথ্যের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার সিরিয়ার তুর্কি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এমন সংবাদ প্রকাশ করেছেন সেই দেশের গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
খবরে বলা হচ্ছে, ফাহরেতিন আলতুন বলেছেন, তুরস্কের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে এদের আটক সফলতার আরেকটি দৃষ্টান্ত। এ অঞ্চলে যারা সন্ত্রাস ছড়াতে চায় তাদের বিচারের আওতায় আনতে আঙ্কারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে ২৭ অক্টোবর শনিবার রাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় রাতের বেলায় একটি অভিযান চালানো হয়। সে সময় আবু বকর আল-বাগদাদি নিজের শরীরে থাকা সুইসাইড ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটান বলে জানিয়েছেন জানান ট্রাম্প। এছাড়া ২০১১ সালে মার্কিন সরকার বাগদাদিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
কে এই আবু বকর আল-বাগদাদী?
আবু বকর আল বাগদাদীর আসল পরিচয় কী তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আল বাগদাদী তার আসল নাম নয় বলে মনে করা হয়। তার নাম আবু বকর আল-বাগদাদী বলা হলেও তার আসল নাম ইব্রাহিম আওয়াদ আল-বদরি। ধারণা করা হয়, ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারার কাছে একটি সুন্নি পরিবারে তার জন্ম।
অল্প বয়সে গভীরভাবে ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর কোরানিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০৪ সালে ইঙ্গ-মার্কিন আক্রমণের শিকার হয়ে ক্যাম্প বুকাতে বন্দী হন তিনি। সেখানে তিনি প্রাক্তন ইরাকী গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ অন্য বন্দীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০০৩ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক অভিযান চলে, তখন আল বাগদাদী বাগদাদের কোন একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন বলে দাবি করা হয় কোন কোন রিপোর্টে।
অনেকের বিশ্বাস, সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলেই আল বাগদাদী জঙ্গি জিহাদিতে পরিণত হয়েছিলেন। তবে অনেকের ধারণা, যখন তাকে দক্ষিণ ইরাকে একটি মার্কিন সামরিক ক্যাম্পে চার বছর আটকে রাখা হয়েছিল তখনই আসলে আল বাগদাদী জঙ্গিবাদে দীক্ষা নেন। এই ক্যাম্পে অনেক আল কায়েদা কমান্ডারকে বন্দী রাখা হয়েছিল। আল বাগদাদী পরে ইরাকে আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরে অবশ্য ইরাকের আল কায়েদা নিজেদের ২০১০ সালে 'ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট’ বলে ঘোষণা করে।