জমি কিনে ফেলে রাখছেন সিলেটের প্রবাসীরা

দেবাশীষ দেবু সিলেট

প্রবাসীবহুল সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর জমি পড়ে রয়েছে পতিত অবস্থায়। একসময় এসব জমিতে ধান চাষ হতো নিয়মিত। এখন পুরোপুরি অনাবাদি। পতিত এসব জমির সিংহভাগই প্রবাসী মালিকানাধীন। গোটা সিলেট বিভাগেই এখন প্রবাসীদের মধ্যে জমি কিনে পতিত ফেলে রাখার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো, হাওড় এলাকা হওয়ায় এখানে জমি বর্গা দিতে গেলে নানা সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। উপরন্তু ভয় রয়েছে বেদখল হয়ে যাওয়ারও। কারণেই বিদেশে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তারা প্রচুর জমি কিনছেন ঠিকই, কিন্তু তা ফেলে রাখছেন অনাবাদি অবস্থায়।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার জানাইয়া গ্রামের বাসিন্দা আখলাস আহমদ বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী। বছর দশেক আগে একবার দেশে ফিরে তিনি আট একর ধানি জমি ক্রয় করেন। এর পর থেকেই জমি পতিত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন তিনি।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলী হোসেনের মালিকানায় রয়েছে প্রায় ২০ একর কৃষিজমি। এসব জমি পতিত পড়ে আছে অনেক দিন ধরে। আলী হোসেন দেশে তেমন আসেন না। দেশে সম্পত্তি দেখাশোনা করেন আলমগীর হোসেন নামে তার এক চাচাতো ভাই।

আলমগীর হোসেন বলেন, জমিগুলো হাওড় এলাকায়। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। তেমন ফসল হয় না। শ্রমিক সংকটও রয়েছে। বারবার বিদেশ থেকে টাকা আনাই কৃষিকাজের জন্য, কিন্তু শেষে আশানুরূপ ফসল হয় না। এজন্য এখন বিদেশ থেকে চাষাবাদ না করতে বলা হয়েছে।

সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে মোট কৃষিজমির পরিমাণ ১৩ লাখ ২২ হাজার ৭৮৫ হেক্টর। নিট ফসলি জমি লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৮ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার হেক্টর জমি এখন অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিভাগটিতে সবচেয়ে বেশি পতিত জমি আছে সিলেটে। জেলাটিতে প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

বিষয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সেচ সংকট, শ্রমিকস্বল্পতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল না হওয়াসহ নানা কারণে প্রবাসীরা জমিতে চাষাবাদ না করে ফেলে রাখেন। এছাড়া তাদের মধ্যে জমি বেদখল হয়ে যাওয়ারও এক ধরনের ভয় কাজ করে।

এভাবে জমি অনাবাদি ফেলে রাখার প্রভাব দেখা যাচ্ছে অঞ্চলের শস্য উৎপাদনেও। দেশে ফসলের নিবিড়তা যেখানে ১৯৪ শতাংশ, সেখানে সিলেট বিভাগে তা ১৭০ শতাংশ।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন