ব্যাংকে বাংলা ভাষার কদর

ড. এস এম আবু জাকের

দেশে সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের ব্যাপারে কারো দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না। তবে বাংলার ব্যবহার বাংলার প্রচলন নিশ্চিত করার দাবি বা স্লোগান নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে যেরূপ সবাই সোচ্চার থাকেন, ফেব্রুয়ারির পর দাবি বা স্লোগান আবার শীতনিদ্রায় আচ্ছন্ন থাকে। তাই স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরও সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করার স্লোগানটি রাজপথেই থেকে গেল, পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলো না। বিষয়টা আমাদের জন্য লজ্জারও বটে। বাংলা আমাদের একমাত্র জাতীয় ভাষা, বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা, বাংলা একটা মৌলিক ভাষা, বাংলা একটা স্বাধীন ভাষা। বাংলায় আধুনিক ভাষার সব গুণাগুণ বর্তমান থাকার পরও রাষ্ট্র তথা সর্বস্তরের লোক বাংলাকে সর্বস্তরে প্রচলন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কেন যেন অনীহা। এর একমাত্র কারণ আমার কাছে হীনম্মন্যতা ছাড়া আর কোনো কিছু মনে হয় না। ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াই, ছেলে বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছে বলে বাংলা একটু কম জানে, বাংলার চেয়ে ইংরেজিতে চিঠি লিখতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, বাংলার চেয়ে ইংরেজি আমার কাছে সহজ মনে হয়, বাংলার চেয়ে ইংরেজিতে বলতে আমি ফ্লুয়েন্টএসব যারা বলেন, তারা বাংলাকে প্রকারান্তরে হেয়প্রতিপন্ন করেন তথা অপমান করেন। বাংলাকে অপমান করার অন্যতম কারণ ঔপনিবেশিক মানসিকতা চাটুকারিতা। ব্রিটিশরা ২০০ বছর ধরে আমাদের রক্তে ইংরেজি ভাষার যে ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়েছে, তার অ্যাকশন এখনো ফুরিয়ে যায়নি। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে আমরা প্রতিষেধক নেয়ার পরও ওই অ্যাকশনটা একেবারে নিঃশেষ হয় না। হাই পাওয়ার প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য যদি রাষ্ট্র নোবেল পুরস্কার (?) ঘোষণা করে, তাহলে এর একটা স্থায়ী সমাধান হয়তো আমরা আশা করতে পারি।

যততত্র বাংলা যখন অনেকটা অপনোদনের শিকার, সেখানে ব্যাংকগুলো বাদ যাবে কেন! ব্যাংক আপামর জনগোষ্ঠীকে সেবা দানের জন্য বদ্ধপরিকর। শিক্ষিত, অশিক্ষিত, পথশিশু, কৃষক, গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে এমন কোনো লোক নেই, যাদের ব্যাংকিং সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অথচ তাদের সেবাদানের সময় যেসব ফরম, টাকার রসিদপত্র, নথি, ঋণের স্বীকৃতির দলিলাদি (চার্জ ডকুমেন্ট), বন্ধক দলিল, মঞ্জুরিপত্র, গ্রাহকের সঙ্গে পত্র যোগাযোগ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, সবই ইংরেজিতে (দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) একজন অশিক্ষিত লোক কিছুটা বাংলা জানেন কিংবা শুধু সইটা করতে জানেন, তাকে যদি ঋণের জন্য ইংরেজিতে লেখা একগাদা নথি বা দলিলে সই করতে বলা হয়, তিনি ঋণটা নেয়ার জন্য না বুঝে না পড়ে অবলীলায় সই করে দেন। ব্যাংকার প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশ পরিপালন করে সন্তুষ্ট। কিন্তু যে লোকটা ইংরেজি ভাষায়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন