দুই শতাংশ অর্থ আগাম পরিশোধসাপেক্ষে খেলাপিদের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারকে বৈধ ঘোষণা করে তার মেয়াদ ৯০ দিন বাড়িয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে এসব ঋণখেলাপিকে নতুন ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০১২ সালের মাস্টার সার্কুলার অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
ওই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে
রিট আবেদনে দেয়া রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল
আলমের বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেন। পাশাপাশি ঋণ অনুমোদন ও আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর
দুর্বলতা চিহ্নিত করে সম্ভাব্য সমাধানের বিষয়ে পরামর্শ দিতে নয় সদস্যের কমিটি
গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম,
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আজমালুল হোসেন
কিউসি, শামীম খালেদ আহমেদ ও ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান, ব্যাংকার্স
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন শাহ মঞ্জুরুল হক। দুদকের পক্ষে ছিলেন
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, কোর্ট
আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন যে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে যারা
বিশেষজ্ঞ আছেন, সেই রকম নয়জন ব্যক্তিকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে, সেই
কমিটি সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের যে দুর্বলতা, বিশেষ করে ঋণ পরিশোধ, ঋণ
অনুমোদন এবং সংগ্রহে অনিয়মসহ সব বিষয়ে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি করবে। সেখানে তারা
এগুলো তৈরি করে কী কী উপায়ে এগুলো দূর করা যায়, এ দুরবস্থাগুলো দূর করা যায়, এ
ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তারা প্রতিবেদন দেবেন। আদালত বলেছেন, যে
প্রতিবেদন দেয়া হবে বাংলাদেশ তা কার্যকর করবে।
উল্লেখ্য, মানবাধিকার
সংগঠন এইচআরপিবির করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির
তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুল জারি
করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম,
দুর্নীতি,
অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনে কেন নির্দেশ দেয়া
হবে না এবং এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা
জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি
বিভাগ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। এরপর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে
গত ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজার রাখার জন্য আদেশ
দিয়েছিলেন আদালত।