উজ্জ্বল আমিনুল-আফিফ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দীর্ঘদিন ধরে একজন লেগ স্পিনারের সন্ধানে ছিল বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রকাশ্যে আক্ষেপও শোনা গেছে টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে এ বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় এক রিস্ট স্পিনার দলে থাকলে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আরেকটু অন্য রকম হলেও হতে পারত। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো দায়িত্ব নিয়েও খোঁজ করছিলেন একজন লেগ স্পিনারের। আর এমন সন্ধানী কার্যক্রম থেকেই বেরিয়ে এলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ত্রিদেশীয় সিরিজে অভিষেক হলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেট। এমন পারফরম্যান্সই আলোচনায় তুলে আনে আমিনুলকে। সেই সঙ্গে লেগ স্পিনার না থাকার যে আক্ষেপ, তাও দূর হলো তাকে দিয়ে। ভারত সফরে সুযোগ পাওয়াটা তাই অবধারিতই ছিল।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও জানালেন আমিনুলের ওপর আস্থা রাখার কথা। বল হাতে গতকাল সেই আস্থার যথার্থ প্রতিদানও দিলেন এ রিস্টি। বল হাতে ভারতের বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনকে জ্বালিয়ে মেরেছেন। ৩ ওভারে ২২ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেট। তার পাওয়া উইকেট দুটিই মূলত ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে ভারতকে। অবশ্য আমিনুল একাই নন, বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন অলরাউন্ডার আফিফ হোসেনও। এর আগে ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানো আফিফ বল হাতেও ছিলেন উজ্জ্বল। তিন ওভারে ১ উইকেট নিলেও রান দিয়েছেন মাত্র ১১টি। তার করা ১৮টি বলের ১০টিই ছিল ডট। এ দুজনের ৬ ওভারে সব মিলিয়ে রান এসেছে ৩৩, উইকেট তিনটি। যেখানে ১৬টি বলেই কোনো রান আসেনি। তরুণ বোলারদের গড়ে দেয়া এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়েই ভারতের মাটিতে যেকোনো সংস্করণে প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ।  

সাকিব-তামিম দলে না থাকায় বাড়তি চাপ ছিল অধিনায়কের ওপর। বিশেষ করে সাকিব না থাকায় দলেও খাঁটি অলরাউন্ডারের অভাব চোখে পড়ছিল। সেই দায়িত্ব নেয়ার জন্য সবারই দৃষ্টি ছিল আফিফের ওপর। এর আগে টি২০-তে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেও বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন কম। কিন্তু এবার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ঠিকই ভরসা রাখলেন আফিফের ওপর। তার মর্যাদা দিতেও অবশ্য দেরি করেননি। প্রথম ওভারে রান দিলেন ২। দ্বিতীয় ওভারেও জায়গা দেননি ঋষভ পান্তকে। সেই ওভারেও ২ রানের বেশি নিতে পারলেন না শিখর ধাওয়ান ও পান্ত। তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অবশ্য হজম করলেন চার। তবে শেষ বলে শিভাম দুবেকে বিভ্রান্ত করে নিলেন দুর্দান্ত এক ক্যাচ। সেই চারটি হজম করতে না হলে আফিফের বোলিং ফিগার আরো দৃষ্টিনন্দন হতে পারত। অবশ্য এমন দারুণ বোলিংয়ের পরও ৪ ওভারের কোটা পূরণ করতে পারেননি আফিফ। শেষ দিকে পেসারদের ওপরই ভরসা রাখতে চাইলেন মাহমুদউল্লাহ।

কোটা শেষ করতে পারেননি আমিনুলও। নিজের তৃতীয় বলেই ফেরান লোকেশ রাহুলকে। অফ স্টাম্পের বাইরে তার করা লেন্থ বল টার্ন করে চলে যাচ্ছিল বাইরের দিকে। কাট করতে চেয়েছিলেন লোকেশ। কিন্তু ব্যাটে-বলে না হওয়ায় সোজা জমা পড়ল মাহমুদউল্লাহর হাতে। এক উইকেট নিয়ে সে ওভারে দিলেন ৯ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারেও দিলেন ৯ রান। এবার অবশ্য কোনো উইকেট নিতে পারেননি। তবে তৃতীয় ওভারে ফিরে ঠিকই জাদু দেখান। দ্বিতীয় বলেই ফেরালেন শ্রেয়াস আইয়ারকে। অফ স্টাম্পের বাইরের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি তালুবন্দি হন মোহাম্মদ নাঈমের হাতে। নিজের তৃতীয় ওভারে রান দিলেন ৪। এরপর তাকে আর বোলিংয়ে আনেননি অধিনায়ক। এদিন শেষ দুই ওভারে দুই পেসার শফিউল ও আল-আমিন মিলে রান দিলেন ৩০। অবশ্য তার পরও ভারতের রান থাকল দেড়শর নিচে, যার বেশির ভাগ কৃতিত্বই আফিফ-আমিনুলের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন