জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করতে চাইলে এশিয়াকে কয়লা ‘আসক্তি’ ছাড়তে হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সব দেশকে একসঙ্গে জোরেশোরে কাজ করার তাগিদও দিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসি।
গুতেরেস বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এ অঞ্চলের দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে দেশগুলোকে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বন্যার বিশেষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলো। এ বিষয়টিকে উদ্ধৃত করে তিনি এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, এশিয়ার বহু দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উৎস কয়লা।
গত শনিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘আমাদের সময়ের প্রমাণিত সমস্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক গবেষণা ফলাফলের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আগে যা ভাবা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তন তার চেয়েও কয়েক লাখ বেশি মানুষকে ২০৫০ সালের মধ্যে উপকূলীয় বন্যার ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। যারা এ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, তাদের অধিকাংশই হবে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাসিন্দা।
গুতেরেস বলেন, মানুষ এ সংখ্যার সঠিকতা নিয়ে আলোচনা করতে পারে, কিন্তু একটা বিষয় ঠিক যে সংকট আমাদের দ্বারপ্রান্তে।
এশিয়ায় এ ইস্যুটি ‘বিশেষভাবে সংবেদনশীল’ হওয়া সত্ত্বেও ‘প্রভাব ফেলার মতো সংখ্যার’ নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এশিয়ার জন্য এ ইস্যুটি ‘বিশেষভাবে সংবেদনশীল’, কেননা
সেখানে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যার’ নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কার্বনের ওপর মূল্য আরোপ করতে হবে আমাদের। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিও বন্ধ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংবাদ সংগঠন ক্লাইমেট সেন্ট্রাল গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৯ কোটি লোক বাস করবে এমন এলাকাগুলোয়, যা ২১০০ সালে পূর্ণ জোয়ার রেখার নিচে চলে যেতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন সহনীয় মাত্রায় কমালেও এশিয়ার ছয়টি দেশ (চীন, বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড) ২০৫০ সাল থেকে বার্ষিক উপকূলীয় বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে।