সেমিনারে বক্তারা

২০২৭-এর মধ্যে দেশ হতদরিদ্রমুক্ত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থাান তৈরির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বেসরকারি খাত। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যেই দেশ হতদরিদ্রমুক্ত হবে। এটিসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যান্য লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা নিতে হবে বেসরকারি খাতকেই। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্সও অন্যতম সহায়ক খাত হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৭৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রবাসীরা ২০৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।কনসালটেশন অন প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট (পিএসই) ইন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (এসডিজি) ইন বাংলাদেশ: বন্ডিং অ্যান্ড বিয়ন্ড শীর্ষক গতকাল আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে রাজধানীর একটি হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) . শামসুল আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আমাদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। প্রযুক্তিতে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। তবে সরকারি-বেসরকারি-আধা সরকারি এবং এনজিও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসডিজি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। বেসরকারি খাতকে অবশ্যই মূল ভূমিকা নিতে হবে। এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে দারিদ্র্য নিরসন, ন্যায্যতা ও সমতা নিশ্চিত করা, যার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।

. শামসুল আলম বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে, তার প্রায় ৮০ ভাগই করছে বেসরকারি খাত। তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ বাংলাদেশী রয়েছেন। চলতি বছর প্রবাসীরা ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ১৯৭৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রবাসীরা ২০৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। তাই এসডিজি অর্জনে অর্থের বড় উৎস হতে পারেন প্রবাসীরা। এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য দারিদ্র্য নিরসনে কার্যক্রম চলছে। ২০২৭ সালের মধ্যে দেশ হতদরিদ্রমুক্ত হবে। দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করার পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। বাংলাদেশ হবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সক্ষম একটি দেশ। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি খাত এসডিজি বাস্তবায়নে মূল চালকের ভূমিকা রাখতে পারে।

সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, এসডিজির মূলমন্ত্র বাস্তবায়নে বেসরকারি খাত যাতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য সরকারি খাতকে অনেক বেশি সহায়তা দিতে হবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একক শিল্পের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নানা খাতের ওপর জোর দিতে হবে। বিশেষ করে পোশাক খাতের বাইরে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংসহ আরো বিভিন্ন খাতে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। এসডিজি বাস্তবায়নে এনজিও, সুশীল সমাজ ও ব্যাংকিং খাতকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতে প্রধান নাবিক হিসেবে কাজ করতে হবে।

বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তি ও সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। এসডিজির গোল-৯ বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া এসডিজি-৮ ও ১২ গোলের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে বেসরকারি খাত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিসি, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ মুনীর খসরু বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলে এক ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। বেসরকারি খাত হচ্ছে এসডিজির ইঞ্জিন। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। ডিজিটাল ঘাটতি এসডিজির বড় বাধা হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন