ডিসেম্বরেই উন্মুক্ত হচ্ছে ফেনীর বিজয় সিংহ ও রাজাঝির দীঘি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি ফেনী

প্রায় শেষ পর্যায়ে ফেনীর ঐতিহ্যবাহী বিজয় সিংহ ও রাজাঝির দীঘির সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অধীনে এ কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। আশা করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরেই দীঘি দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এতে ফেনীবাসীর চিত্তবিনোদনের সুযোগ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজয় সিংহ দীঘির অবস্থান ফেনী সার্কিট হাউজের সামনে পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ৩৭ দশমিক ৫৭ একর আয়তনের দীঘিটি খনন করেন সেন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেন। তার নামানুসারেই দীঘিটির নামকরণ করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বৃক্ষশোভিত এ দীঘিতে প্রতিদিন ভ্রমণে আসেন পর্যটকরা। দীঘিটি দৃষ্টিনন্দন করতে ১৯৯৫ সালে তত্কালীন জেলা প্রশাসক চারপাশের পাড়ের এসব গাছ রোপণ করেন। এরপর ২০১৫ সালে ফেনী পৌরসভার অর্থায়নে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে দীঘির চারপাশে চলাচলের সুবিধার জন্য কংক্রিটের ঢালাই দেয়া হয়।

তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিজয় সিংহ ও রাজাঝির দীঘির পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, গাইডওয়াল নির্মাণ, সীমানাপ্রাচীর স্থাপন, বনায়ন ও পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট। ২ কোটি ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ফেনী পৌরসভা। কাজটি দেয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ আহাম্মদকে। এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ে বিজয় সিংহ দীঘির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, গেট স্থাপন, পার্কিং ঢালাই, দর্শনার্থীদের বসার স্থান উন্নয়ন, টয়লেট স্থাপন ও আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে ১০ দশমিক ৩২ একরজুড়ে রাজাঝির দীঘিটি খনন করা হয় প্রায় ৫০০ বছর আগে। ১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে এ দীঘির পাড়েই সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়। দীঘির পাড়ে গড়ে ওঠে ফেনী কোর্ট, ফেনী সদর থানা, মসজিদ, অফিসার্স ক্লাব, শিশু পার্ক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ নানা প্রতিষ্ঠান। তবে দিনদিন দীঘিটির চারপাশে বাড়তে থাকে ক্ষুদ্র ও ফুটপাথের ব্যবসায়ীর সংখ্যা। এতে দীঘির সৌন্দর্য ঢাকা পড়ে যায়। বেড়ে যায় হকারদের সংখ্যা।

এ অবস্থায় দীঘিটির চারপাশের শোভাবর্ধনে চলতি বছরের শুরুর দিকে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অধীনে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ফেনী পৌরসভার তত্ত্বাবধানে। প্রকল্পের আওতায় শহরের পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দীঘির চারপাশে প্রাচীর, রাস্তা প্রশস্তকরণ ও বাগান তৈরিসহ বিভিন্ন উন্নয়নকাজ শুরু হয়। বর্তমানে দীঘির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের পথচারীদের চলাচলের জন্য গ্যাংওয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে। দীঘির ভেতরের অংশে পথের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে বসার স্থান। এখন চলছে টাইলস বসানো ও রঙের কাজ।

এ অবস্থায় দুটি দীঘিই ডিসেম্বরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন