বাজার চাঙ্গা করার প্রয়াসে উত্তোলন হ্রাস এবং সদস্য দেশগুলোয় নানা কারণে উত্তোলন হ্রাস-বৃদ্ধিতে দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের উত্তোলন কমতির দিকে ছিল। হামলার পর শীর্ষ রফতানিকারক দেশ সৌদি আরবের উত্তোলন বাড়ার ফলে চলতি বছরের অক্টোবরে ওপেকের জ্বালানি তেল উত্তোলন আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের করা জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরে ১৪টি দেশের সংগঠন ওপেকের দৈনিক জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল, যা সেপ্টেম্বরের উত্তোলনের চেয়ে ৬ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল বেশি। ২০১১ সালের পর এ মাসে সবচেয়ে কম জ্বালানি তেলের উত্তোলন করেছিল সংস্থাটি। এমনকি একুয়েডরের উত্তোলন কমে গেলেও সৌদি আরবের কারণে অক্টোবরে মোট উত্তোলন বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরবে এ সময় জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন ছিল ৯৯ লাখ ব্যারেল, যা সেপ্টেম্বরের উত্তোলনের চেয়ে ৮ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বেশি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল উত্তোলন প্রতিষ্ঠান আরামকোর দুটি স্থাপনায় ড্রোন হামলা হয়। এতে তাত্ক্ষণিকভাবে দেশটির দৈনিক উত্তোলন অর্ধেকে নেমে আসে। ফলে জ্বালানি পণ্যটির দাম প্রতি ব্যারেল ৭২ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। যদিও সৌদি আরব স্বল্প সময়ের মধ্যে উত্তোলন সক্ষমতায় ফিরে আসায় আবারো দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসে।
জ্বালানি তেলের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য এবং বাজার চাঙ্গা করার জন্য ওপেক ও ওপেক-বহির্ভূত উত্তোলক দেশগুলোকে নিয়ে ওপেক প্লাস জোট করা হয়। এর নেতৃত্বে রয়েছে যথাক্রমে সৌদি আরব ও রাশিয়া। এ জোটের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন ১২ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনছে। এর মধ্যে ওপেক জোটের ১১টি দেশ দৈনিক উত্তোলন আট লাখ ব্যারেল কমিয়ে থাকে। আর জোটের অন্য তিনটি দেশ ইরান, ভেনিজুয়েলা ও লিবিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তোলন হ্রাস থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ওপেক।
এর মধ্যে ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর ওপর
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে অক্টোবরেও দেশটির উত্তোলন কম ছিল।
অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধের ফলে দেশটির জ্বালানি তেল উত্তোলনে ধস নামে।
আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত চুক্তি অনুযায়ী, ওপেকের ১১টি দেশ উত্তোলন কমিয়ে আনতে বাধ্য। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, কোটা অনুযায়ী উত্তোলন হ্রাস করার প্রবণতা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪০ শতাংশে। যেখানে চুক্তি অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে ওপেকের সম্মিলিত উত্তোলন প্রবণতা ছিল ২২২ শতাংশ।
তবে সৌদি আরব সাময়িকভাবে জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়ালেও বাজার চাঙ্গা করতে যেকোনো পদক্ষেপ নিতেই প্রস্তুত বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কমার্জব্যাংকের বিশ্লেষক কারস্টান ফিরিটস বলেন, জ্বালানি তেলের বাজারে ভারসাম্য ফেরাতে এবং দাম বাড়াতে সৌদি আরব প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করবে।
অন্যদিকে অক্টোবরে ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তোলন হ্রাস পেয়েছে একুয়েডরের। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ তীব্র হওয়ায় দেশটিতে এ সময় কমপক্ষে ২০টি তেলক্ষেত্র থেকে উত্তোলন বন্ধ ছিল। এ বিক্ষোভের ফলে ৯ অক্টোবর থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয় দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোএকুয়েডর। যদিও ২০ অক্টোবর থেকে আবারো দেশটি জ্বালানি তেল রফতানি শুরু করে।
এছাড়া একুয়েডরের পরে জ্বালানি রফতানিতে গত মাসে বড় আকারের ধস নামে ওপেকের দ্বিতীয় শীর্ষ উত্তোলক দেশ ইরাকের। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর দিয়ে এ সময় জ্বালানি তেলের রফতানি বড় পরিসরে কমে যায়। যদিও দেশটি কোটার বাইরে গিয়ে উত্তোলন
- বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে
- হিলিতে আলুর দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা
- নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার বাজার ঊর্ধ্বমুখী
- ৯ মাসে ৪৩ হাজার টন শুকনা মরিচ আমদানি
- ভুট্টার বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়েছে আইজিসি
- প্রথম প্রান্তিকে ভিয়েতনামের রেকর্ড কফি রফতানি