জনসংখ্যা আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিবেচনায় ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি নগরীর তালিকায় স্থান করে নেবে ঢাকা। ওই সময় জনসংখ্যার ভিত্তিতে ঢাকা হবে বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ নগরী। জিডিপির বিবেচনায় ঢাকার অবস্থান হবে দ্বিতীয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নগরগুলো
চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করছে। বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ এখন শহরকেন্দ্রিক।
ক্রমান্বয়ে বাড়ছে নগরায়ণের এ গতি। আর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে
নগরায়ণ। অর্থনীতির আকার, জনসংখ্যা ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার—এ তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০৩৫ সাল
নাগাদ শীর্ষ ১০ নগরীর তিনটি তালিকা তৈরি করেছে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস।
জনসংখ্যার ভিত্তিতে ২০৩৫ সালে শীর্ষ
নগরী হবে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা। ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের বাস হবে নগরীটিতে। তবে
২০৩৫ সাল নাগাদ ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী হিসেবে নাও থাকতে পারে জাকার্তা।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও পানিসংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে
জাকার্তার পরিবর্তে বোর্নিও দ্বীপপুঞ্জে রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে
ইন্দোনেশিয়ার। ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ নিয়ে জাপানের টোকিও তালিকার দ্বিতীয় ও ৩ কোটি
২২ লাখ মানুষ নিয়ে চীনের চাংকিং তৃতীয় স্থানে থাকবে। এ তালিকার চতুর্থ স্থানটিতে
থাকবে ঢাকা। ওই সময় ঢাকার জনসংখ্যা হবে ৩ কোটি ১২ লাখ। এছাড়া ২ কোটি ৫৩ লাখ মানুষ
নিয়ে চীনের সাংহাই পঞ্চম, ২ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ নিয়ে পাকিস্তানের করাচি ষষ্ঠ, ২
কোটি ৪৭ লাখ মানুষ নিয়ে কঙ্গোর কিনশাসা সপ্তম ও ২ কোটি ৪২ লাখ মানুষ নিয়ে নাইজেরিয়ার
লাগোস অষ্টম স্থানে থাকবে। মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটির অবস্থান হবে নবম।
২০৩৫ সালে মেক্সিকো সিটির জনসংখ্যা হবে ২ কোটি ৩৫ লাখ। আর ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ
নিয়ে ভারতের মুম্বাইয়ের অবস্থান হবে তালিকার দশম স্থানে।
২০৩৫ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে
বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ নগরী হবে ঢাকা। ওই সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৬
শতাংশ। এ তালিকায় ভারতের বেঙ্গালুরুর পরই হবে ঢাকার অবস্থান। সাড়ে ৮ শতাংশ
প্রবৃদ্ধি নিয়ে বেঙ্গালুরু বিশ্বের শীর্ষ নগরীর অবস্থানে থাকবে। এ তালিকায় ভারতের
মুম্বাই ও দিল্লিও থাকবে যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে। এছাড়া চীনের শেনঝেন, ইন্দোনেশিয়ার
জাকার্তা, ফিলিপাইনের ম্যানিলা,
চীনের তিয়ানজিন, সাংহাই ও চাংকিং এ তালিকার পরবর্তী
অবস্থানগুলোয় থাকবে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস। তৃতীয় থেকে দশম স্থানে থাকা
নগরীগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ থেকে ৪ দশমিক ৯ শতাংশের মধ্যে থাকবে।
এছাড়া অর্থনীতির আকার বিবেচনায় ২০৩৫
সালে আড়াই ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপি নিয়ে ১০টি নগরীর তালিকায় শীর্ষে থাকবে
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকবে যথাক্রমে জাপানের টোকিও, যুক্তরাষ্ট্রের
লস অ্যাঞ্জেলেস, যুক্তরাজ্যের লন্ডন,
চীনের সাংহাই ও বেইজিং, ফ্রান্সের
প্যারিস, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো,
চীনের গুয়াংঝু ও শেনঝেন। তিনটি তালিকায় থাকা
একমাত্র নগরী হলো চীনের সাংহাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩৫
সাল নাগাদ নগরগুলোর এমন অবস্থান তৈরিতে অন্যান্য বিষয়েরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো বিষয়গুলোও এক্ষেত্রে প্রভাব
রাখতে পারে।