পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মাণ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বান্দরবান

২০১৩-১৪ অর্থবছরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা মংশৈপ্রু চৌধুরীর জন্য বাসভবন কাম হেডম্যান অফিস নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ। এর প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো দ্বিতল বাড়িটির নির্মাণ শেষ হয়নি। এতে বিপাকে পড়ে আগের ভাঙা বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা মংশৈপ্রু চৌধুরীকে।

জানা গেছে, মংশৈপ্রু চৌধুরী ২৭৫ নং ভাল্লুক ভাইয়া মৌজার হেডম্যান। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার পুরনো জীর্ণ বসতবাড়ি ভেঙে উপহার হিসেবে দ্বিতল পাকা ভবন তৈরি করে দেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ ভবনে হেডম্যান অফিসও স্থাপন করার কথা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নভেম্বরে ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। তবে দুই দফায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করেও বাড়িটির নির্মাণ শেষ হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির দ্বিতীয় তলায় দরজা-জানালা ও বারান্দার রেলিং লাগানো হয়েছে। তবে নিচতলায় কেবল ইটের গাঁথুনি দেয়া হয়েছে। মেঝে, সিমেন্টের আস্তরণ, দরজা-জানালা ও রঙ কোনোকিছুর কাজ করা হয়নি। এজন্য ইটের গাঁথুনি স্থানে শেওলা জমেছে।

মংশৈপ্রু চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা জানান, অর্ধনির্মিত এ ভবনের নিচতলায় প্রায় গরু ও ছাগলসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ে।

প্রথম দফায় ভবনটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার মো. ইকবাল জানান, শুরুতে ভবনটি নির্মাণের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু সে স্থলে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়। তাই কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, অর্ধনির্মিত বাড়িটির নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দ্বিতীয় দফায় ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় জেলা পরিষদ। ওই সময় জেলা শহরের মেম্বারপাড়ার শয়ন নামের এক যুবককে এ কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে তিনি নির্মাণকাজ শেষ করেননি।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধার বাসভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত ছিল এটা তিনি জানেন। কিন্তু পরে সমাপ্ত করা হয়েছিল কিনা, তা তার মনে পড়ছে না। শয়ন নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।

মংশৈপ্রু চৌধুরী জানান, পাঁচ বছরেও বাড়িটি নির্মাণ শেষ করতে পারেনি জেলা পরিষদ। এটা মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার শামিল। আমি এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন