পরিবর্তনশীল বিশ্বের সর্বকালের
মানুষের জন্য ইসলামে রয়েছে সব বিষয়ের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও সমাধান। পৃথিবীর
মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে জীবন-জীবিকা তথা মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মানবজীবনের অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইসলাম এ ব্যাপারে শুধু দিকনির্দেশনামূলকই নয়, এর
অবকাঠামোগত দিকও সবিস্তারে উপস্থাপন করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘বিচরণশীল
প্রতিটি প্রাণীর জীবিকার দায়িত্ব মহান আল্লাহ নিজের ওপর ন্যস্ত করে নিয়েছেন (সুরা
হুদ-৬)।’ তিনি আরো বলেন, ‘হে
মুমিনগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল বস্তুসামগ্রী আহার করো, যা
আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো আল্লাহর, যদি
তোমরা তারই ইবাদত করে থাকো
(বাক্বারাহ-১৭২)।’ মানুষের অর্থনৈতিক জীবন যাতে নিরাপদ, পবিত্র ও হালাল থাকে, এজন্য ‘ব্যবসা-বাণিজ্যকে
আল্লাহ হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম
(সূরা বাক্বারাহ-২৭৫)।’ আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, ‘তিনটি
জিনিসের মধ্যে বরকত রয়েছে—১. মুদারাবার (একজনের পুঁজি ও অন্যজনের শ্রম)
মাধ্যমে বিনিয়োগ, ২. বাই-মুয়াজ্জালের (বাকিতে
ক্রয়-বিক্রয়) মাধ্যমে
লেনদেন এবং ৩. নিজে খাওয়ার জন্য গমের সঙ্গে যব মেশানো (ইবনে
মাজাহ)।’ ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত আরো অনেক আয়াত ও হাদিস রয়েছে।
এ ধরনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে
মানবজীবনাচারকে শুদ্ধ ও পবিত্র রাখতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রাচীনকাল থেকেই
সুদমুক্ত হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পরবর্তীতে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের উদ্ভব হয়েছে।
দেশের মানুষকে একটি হালাল ও গতিশীল
অর্থনৈতিক জীবন উপহার দেয়ার জন্য এ দেশে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের যাত্রা হয় ১৯৮৩
সালে। এর পর থেকে খুব দ্রুতই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের বিকাশ ঘটেছে বাংলাদেশের
অর্থনীতিতে। ক্রমেই সব স্তরের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে ক্রমবর্ধমান এক শিল্পের
মর্যাদা লাভ করে ইসলামী ব্যাংকিং। অল্প সময়েই সব শ্রেণীর গ্রাহকের কাছে জনপ্রিয়
হয়ে ওঠে। যে কারণে মাত্র তিন দশকের মধ্যে দেশে আটটি পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক
ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে অনেক
কনভেনশনাল ব্যাংকও ইসলামী ব্যাংকিং শাখা বা উইন্ডো খুলে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।
বর্তমানে নয়টি কনভেনশনাল ব্যাংকের রয়েছে ১৯টি ইসলামী ব্যাংকিং ব্রাঞ্চ। আর সাতটি
কনভেনশনাল ব্যাংকের রয়েছে ২৫টি উইন্ডো। ২০১৮ সাল শেষে দেশের সব ব্যাংকের মোট শাখা
ছিল প্রায় ১০ হাজার ২৮৬টি। এছাড়া দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফিন্যান্স
অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের
(আইএফআইএল)
আটটি,
হজ ফিন্যান্সের তিনটি মিলিয়ে আরো নয়টি শাখা
রয়েছে। রিলায়েন্স ফিন্যান্সও ইসলামিক উইন্ডো খোলার অনুমতি
পেয়েছে। সম্প্রতি পূবালী ব্যাংক
লিমিটেড বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নতুন করে আরো ১৫টি এবং সোনালী ব্যাংক ৪৭টি ইসলামী
ব্যাংকিং উইন্ডোর অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া আরো অনেক কনভেনশনাল ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ
ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য বা ইসলামী শাখা ও উইন্ডো খোলার জন্য
বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে রেখেছে। আশা করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের
অনুমোদনসাপেক্ষে এ সংখ্যা ক্রমেই আরো বাড়বে। অন্যদিকে জানুয়ারি-মার্চ ২০১৯
পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের মোট ব্যাংকের আমানত ছিল প্রায় ১০
লাখ ২৩ হাজার ২০৬ দশমিক ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মোট আমানত ২৪
লাখ ২১ হাজার ১৮০ দশমিক ৮০ কোটি টাকা। মোট আমানত সংগ্রহে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের
অংশগ্রহণ ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সব ব্যাংকের বিনিয়োগ
ছিল ৯ লাখ ৮১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। মোট বিনিয়োগে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অংশগ্রহণ ২
লাখ ৩৭ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। সুতরাং বাংলাদেশে এর অবদান এখন
অনস্বীকার্য এবং অর্থনীতিতে মোট ব্যাংকিং সেক্টরের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
উল্লেখ্য, ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রায় ৪৩ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে, ২০১৮
সালে যা ছিল প্রায় ১৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
দেশের অর্থনীতিতে শরিয়াহভিত্তিক
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল অংশগ্রহণের এ চমকপ্রদ পরিসংখ্যান শুধু
দেশেই স্বীকৃত নয়, বিশ্বব্যাপী ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক শরিয়াহ স্কলার ড.
ইউসুফ আল কারদাভি বাংলাদেশকে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের
মডেল বলে উল্লেখ করেছেন। ওআইসি ফিক্বহ একাডেমির সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি আল্লামা
তাকি উসমানী বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য
নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে।
মূলত ইসলামী ব্যাংকিং বা ফিন্যান্সের
এ অর্জন সম্ভব হয়েছে পবিত্র কোরআন হাদিস ইজমা কিয়াস নিঃসৃত শরিয়াহভিত্তিক নীতি ও
পদ্ধতি অনুশীলন এবং পরিপালনের কারণে। ইসলামী ব্যাংক বা ফিন্যান্স মুদারাবা
পদ্ধতিতে আমানত সংগ্রহ করে। আমানতের অর্থ মুশারাকা, ইজারা, বাই-মুরাবাহা, বাই-মুয়াজ্জাল, হায়ার
পার্চেজ শিরকাতুল মিলক, বাই সালাম ও বাই ইস্তিসনা ইত্যাদি শরিয়াহ অনুমোদিত বিনিয়োগ পদ্ধতিতে
বিনিয়োগ করে। এ থেকে অর্জিত মুনাফা
‘ওয়েটেজ’ বা ‘ইনকাম শেয়ারিং রেশিও’ পদ্ধতির ভিত্তিতে আমানত গ্রহীতা ও শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বণ্টন করা
হয়। এখানে টাকার বিনিময়ে টাকার লেনদেন করা হয় না। কারণ টাকা নিজে কোনো ভোগ্য পণ্য
নয়, বরং
ভোগ্য পণ্য প্রাপ্তির মাধ্যম মাত্র। এজন্য টাকার বিপরীতে কোনো পণ্য ক্রয়, উৎপাদন
বা ভাড়ার অস্তিত্ব না থাকলে মূলধনের অতিরিক্ত দেয়া-নেয়াকে ইসলাম সমর্থন করে না। তাই
ইসলামী বিনিয়োগ পদ্ধতিতে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী তার কাঙ্ক্ষিত পণ্য ক্রয়ে বা উৎপাদনে
অর্থায়ন করা হয়। অথবা ভাড়ায় বাড়ি,
ফ্ল্যাট,
মেশিনারিজ,
গাড়ি ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করা হয়। এতে সহজেই
বিনিয়োগকৃত পণ্যের চাহিদা বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে উৎপাদনের চাহিদা সৃষ্টির
বিষয়টি অব্যাহত থাকে। এভাবে অর্থনীতির গতিপথ উৎপাদনমুখী হয়ে ওঠে। আর উৎপাদনমুখী
অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির সুযোগও কমে যায়। যে মূল্যস্ফীতি দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে
বড় সমস্যা। শরিয়াহভিত্তিক অর্থায়নের ক্রমবর্ধমান চর্চা না থাকলে মূল্যস্ফীতির এ
হার আরো আশঙ্কাজনকভাবে ঊর্ধ্বমুখী থাকত।
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বা আর্থিক
প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ যে পদ্ধতিতেই হোক,
তাতে যদি শতভাগ শরিয়াহ কমপ্লায়েন্স বা শরিয়াহ
পরিপালন থাকে, তাহলে তা মন্দ বিনিয়োগ বা ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। যে
কারণে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি বিনিয়োগের মাত্রা
অনেক কম।
বিনিয়োগ যদি মুশারাকা বা
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে হয়,
তাহলে মূলধনের রেশিও অনুযায়ী অংশীদারদের মধ্যে
লাভ-ক্ষতি
বণ্টিত হয়। সেক্ষেত্রে তো ঋণখেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে
পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে মুদারাবা বা মুশারাকায় খুব বেশি বিনিয়োগ করা যায় না।
সেটা করা গেলে দেশের অর্থনীতির চিত্র একেবারেই পাল্টে যেত। এরই মধ্যে দেশে
মুদারাবা নীতিতে পরিচালিত ইসলামিক বন্ড ধীরে ধীরে মুদ্রাবাজারে জনপ্রিয় হচ্ছে।
আইনের অনুকূলতা পেলে সুক্বুক বা বন্ড সংকটময় পরিস্থিতিতে তারল্য প্রবাহের এক কার্যকরী
মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের আরেকটি
উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বিনিয়োগের ওপর আরোপিত মুনাফায় চক্রবৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। এতে
কনভেনশনাল ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান মুনাফা লাভে
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিনিয়োগ পদ্ধতি যদি বাই-মুয়াজ্জাল বা বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের বিষয় হয়, সেক্ষেত্রে
বিনিয়োগকৃত পণ্যের জন্য একটা বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে
গ্রাহক তা পরিশোধ করতে না পারলে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রয়মূল্যের অতিরিক্ত
কোনো মুনাফা গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারে না। তবে ক্ষতিপূরণস্বরূপ কিছু আদায়
করতে পারে। কিন্তু সেটাও কোম্পানির মূল আয়ে নেয়া যায় না। জনকল্যাণমূলক কাজে সেটা
ব্যয় করতে হয়।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে যে, টাকার
বিনিময়ে টাকার লেনদেন করতে পারে না বলে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘কলমানি
মার্কেট’ থেকে প্রতিযোগিতামূলক মুনাফায় টাকা বা আমানত নিতে পারে না।
শরিয়াহভিত্তিক কোনো পদ্ধতি একে সমর্থন করে না। এতে প্রচলিত ব্যাংক বা আর্থিক
প্রতিষ্ঠান থেকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানত সংগ্রহে বেশ
পিছিয়ে থাকে। এজন্য শরিয়াহভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি আন্তঃবাজার সম্পর্ক
স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক বা আর্থিক
প্রতিষ্ঠান ঢালাওভাবে অর্থায়ন করতে পারে না। শুধু শরিয়াহসম্মত পদ্ধতি ও প্রজেক্টে
অর্থায়ন করতে পারে। এ ধরনের সীমাবদ্ধতা কনভেনশনাল ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের
নেই।
বিশেষ করে শরিয়াহভিত্তিক দুটি আর্থিক
প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও হজ ফিন্যান্সের জন্য
বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং। কারণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায়
আমানত গ্রাহকদের ডিপোজিটের মুনাফা ব্যাংক থেকে বেশি দিতে হয়। আবার বিনিয়োগ গ্রাহক
থেকেও মুনাফা নিতে হয় বেশি। ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখার সংখ্যাও
অনেক কম। অন্যান্য সীমাবদ্ধতা তো আছেই। এত সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যেও
শরিয়াহভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দুটি বাজারে বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে।
দেশে ইসলামী শরিয়াহ পরিপালিত ব্যাংকিং
ব্যবস্থার বিকাশ আরো ব্যাপক আকারে হলে যে সুফলগুলো অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে, তার
মধ্যে অন্যতম হলো সামগ্রিকভাবে হালাল জীবিকা নিশ্চিত হবে। অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি
কমাবে, সমাজে সাম্য ও সমতা আনার মাধ্যমে বৈষম্য বিদূরিত হবে, আয়
বা সম্পদ বণ্টনে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে,
ঋণখেলাপি বা মন্দ বিনিয়োগের প্রবণতা কমে যাবে, মুষ্টিমেয়
লোকের হাতে সম্পদ কুক্ষিগত হওয়ার মাত্রা ক্রমেই কমতে থাকবে, মজুদদারি
ও ফটকাবাজির মতো কারবারের পথ সংকুচিত হয়ে আসবে এবং ভোগবাদিতার অসম ও অসৎ
প্রতিযোগিতা নিরুৎসাহিত হবে।
বর্তমানে বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থায়
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যাংকিং ব্যবস্থার মর্যাদা পাচ্ছে।
অর্থনীতিতে এর উপযোগিতা ও পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গির জন্য এটি বিশ্বব্যাপী দ্রুত
বর্ধনশীল ব্যাংকিং ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে। বিশ্বের সব শ্রেণীর মানুষের আর্থিক
অন্তর্ভুক্তির মতো সামাজিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে ভূমিকা রাখছে ইসলামী ব্যাংকিং।
মূলধারার অর্থনীতিতে গ্রামীণ তথা প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষদের লেনদেনে
অন্তর্ভুক্তি, ধর্মপ্রিয় মানুষদের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সুদমুক্ত ব্যাংকিং
ব্যবস্থা গড়ে তোলার কারণে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আকর্ষণ
বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এখন প্রয়োজন গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে সঠিক, অভিন্ন
পূর্ণাঙ্গ আইন ও বিধিবিধানের অধীনে বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার শক্ত
কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা। অবশ্য ২০১১ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত
সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ইসলামী ব্যাংকগুলোর বিষয়ে একটি বৈঠকে এ-সংক্রান্ত
আইনের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করেন। এ-সংক্রান্ত পরিপূর্ণ আইন পাস হলে শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক কার্যক্রম সব
সীমাবদ্ধতাকে ছাপিয়ে শুধু বাংলাদেশেই নয়,
বিশ্ব অর্থনীতিতে এক নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করবে।
আবু জাফর মো. সালেহ্:
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী;
ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড