হোয়াটসঅ্যাপ

বিশ্বজুড়ে হ্যাকিংয়ের শিকার সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তারা

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি সামরিক কর্মকর্তারা চলতি বছরের শুরুর দিকে বিস্তৃত পরিসরে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত স্মার্টফোনে গোপন নজরদারি করা হয়েছে। হাতিয়ে নেয়া হয়েছে তথ্য। আর এর পেছনে জড়িত ছিল ইসরায়েলি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপ টেকনোলজিস। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মার্কিন ফেডারেল আদালতে মামলা করার আগে বিষয়ে নিজস্ব অনুসন্ধান দল দিয়ে তদন্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। নিজস্ব তদন্তে একাধিক দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি সামরিক কর্মকর্তাদের ফোনে হ্যাকিংয়ের ঘটনার সত্যতা মিলেছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্টদের বরাতে রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

নজরদারিতে ব্যবহার হওয়া সফটওয়্যার তৈরির জন্য ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের জন্যও প্রতিষ্ঠানটি নানা সফটওয়্যার তৈরি করে। চলতি বছরের এপ্রিল মে মাসে একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে এনএসও গ্রুপ। পরে এসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অন্য ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টে নিজেদের তৈরি বিশেষ ধরনের ম্যালওয়্যারের লিংক পাঠানো হয়। লিংকে ক্লিক করার মধ্য দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য এনএসও গ্রুপের হাতে চলে গেছে।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে হ্যাকিংয়ের বিষয়টি হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। নিজস্ব উদ্যোগে হ্যাকিংয়ের তদন্ত শুরু করে হোয়াটসঅ্যাপ। তদন্তে সম্পৃক্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে রয়টার্স জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২১ এপ্রিল থেকে ১০ মের মধ্যে বিস্তৃত পরিসরে হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পাঁচটি মহাদেশের অন্তত ২০টি দেশে একযোগে হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশ রয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় হাজার ৪০০ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট। টার্গেট ছিল সংশ্লিষ্ট দেশের উচ্চপর্যায়ের সরকারি সামরিক কর্মকর্তারা। তবে এসব দেশের আইনপ্রণেতা, সাংবাদিক, আইনজীবী, কূটনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ফোনেও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হ্যাকিং গোপন নজরদারি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রাথমিক তদন্তে হ্যাকিংয়ের ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর পরই ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসএ গ্রুপের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। ঘটনার পরিধি বিবেচনায় নিয়ে মার্কিন ফেডারেল আদালতে ফেসবুকের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে এমন বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও এবারই প্রথম কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সরাসরি আইনের আশ্রয় নিয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মেক্সিকো, ভারত, পাকিস্তানসহ অন্তত ২০টি দেশের সরকারি সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত হ্যান্ডসেট হ্যাক করা হয়েছে। হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন তথ্য। লন্ডনভিত্তিক একজন মানবাধিকার আইনজীবী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে রয়টার্সের হাতে হ্যাকিংয়ের কিছু ছবি তুলে দিয়েছেন। গত এপ্রিল তার নিজের হ্যান্ডসেটও হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছিল। সরকারি সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ভারতের সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী দলিত সম্প্রদায়ের উন্নয়ন কর্মীদের হ্যান্ডসেট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সাইবার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিটিজেন ল্যাবের জ্যেষ্ঠ গবেষক জন স্কট-রাইলটন বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে একাধিক দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি সামরিক কর্মকর্তার হ্যান্ডসেট হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্তদের তালিকা থেকে সুশীল সমাজ ভিন্ন মতাবলম্বীরা বাদ যায়নি।

শুরুর দিকে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে আইনের আলোকে অভিযোগ মোকাবেলার কথা জানিয়েছে এনএসও গ্রুপ। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘ইচ্ছাকৃত হ্যাকিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এনএসও গ্রুপ বিভিন্ন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন