বেতন কম নিতেও রাজি ছিলেন পিকেরা!

নেইমারকে প্যারিস সেন্ট জার্মেই থেকে বার্সেলোনায় ফেরাতে মরিয়া ছিলেন কাতালান খেলোয়াড়রা। এমনকি তারা কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে গতকাল জানান, নেইমারকে কেনার কাজে সাহায্য করতে তিনি তার সতীর্থরা প্রয়োজনে কম বিলম্বে বেতন নেয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন ক্লাবকে!

গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে নেইমারকে কিনতেসম্ভাব্য সবকিছুকরেছে বার্সেলোনা। খেলোয়াড়টির ২০০ মিলিয়ন ইউরো ফি নিয়েও দুই পক্ষ সম্মত হয়, যদিও শেষ পর্যন্ত দলবদলটি সফলতার মুখ দেখেনি। পুরোটা ফি নগদ না দিয়ে বার্সা চেয়েছিল ইভান রাকিচিত কিংবা ওসমান ডেম্বেলেকে দিয়ে অর্থের চাপ খানিকটা কমাতে। তবে প্রস্তাবে খেলোয়াড়রা যেমন রাজি ছিলেন না, তেমনি পিএসজির আগ্রহও কম ছিল। তাই গ্রীষ্মে নেইমারকে আনা যায়নি ন্যু ক্যাম্পে।

নেইমারকে কিনতে না পারায় ক্লাব কর্মকর্তাদের ওপর নাখোশ হন লিওনেল মেসিসহ বার্সেলোনার শীর্ষ খেলোয়াড়রা। তারা প্রকাশ্যেই কর্মকর্তাদের চেষ্টার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

নেইমারকে নগদ অর্থে কেনার ক্ষেত্রে বাধা ছিল উয়েফার ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে (এফএফপি) নিয়ম। উয়েফার বেঁধে দেয়া অংকের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে গেলেই শাস্তির মুখে পড়তে হয়। তাই নেইমারকে কেনার ঝুঁকি নেয়নি কাতালানরা। নিয়ে পিকে বলেন, এফএফপির নিয়মের মধ্যে থাকতে তারা নিজেদের বেতন কম নিতেও রাজি ছিলেন।

পিকে বলেন, ‘বার্তোমেউকে (মারিয়া হোসেপ, বার্সেলোনা প্রেসিডেন্ট) আমরা আমাদের চুক্তিগুলো সমন্বয় করে নিতে বলেছিলাম। কারণ আমরা জানতাম, এখানে এফএফপি একটা বিষয়। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এতটাই ভালো যে আমরা তাকে বলতে পেরেছি, নেইমারকে আনার কাজটি সহজ করতে আমরা কী করতে পারতাম। আমরা হয়তো আর্থিক সংস্থান করতে পারতাম না, তবে প্রথম বছরের পাওনাটা দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বছরে গ্রহণে রাজি ছিলাম। এভাবে আমরা বার্সেলোনার কাজটি সহজ করে দিতে চেয়েছিলাম। সাহায্য করতে পারলে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। আমরা একটি ফর্মুলা বের করতে চেয়েছিলাম, ক্লাবও এতে খুশি হয়।

২০১৯ সালের গ্রীষ্মে এমনিতেই ২৩২ মিলিয়ন ইউরোর বেশি খরচ করে ফেলে বার্সেলোনা। সময় তারা কিনে নেয় আয়াক্স থেকে মিডফিল্ডার ফ্রেকিং ডি ইয়াং অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ থেকে স্ট্রাইকার আতোয়াঁ গ্রিজম্যানকে। এরপর নেইমারের জন্য ২০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করলে বিপদ হতে পারত।

ডেম্বেলে কিংবা রাকিতিচকে দিয়ে নেইমারকে কিনলে সেক্ষেত্রে খরচের অংকটা বেশ কমে যেতে পারত বার্সেলোনার এবং তখন এফএফপি নিয়ম ভঙ্গ থেকে রক্ষা পেতে পারত তারা। তবে পরিকল্পনামতো সবকিছু হয়নি বলেই নেইমারকে কিনতে পারেনি লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা।

পিএসজিতে নাম লেখানোর আগেই নেইমারকে সতর্ক করেছিলেন তার সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থরা। তেমনই ঘটেছে। প্যারিসে সুখ স্থায়ী হয়নি নেইমারের। নিয়ে পিকে বলেন, ‘আমরা তাকে (নেইমার) বলেছিলাম, তুমি সোনার খাঁচায় যাচ্ছ। সে জানত, বার্সেলোনার দরজা তার জন্য খোলাই।পিকের ধারণা ছিল, নেইমার নাম লেখাতে পারে রিয়াল মাদ্রিদে। নিয়ে তার কথা, ‘আমার ধারণা ছিল, বার্সেলোনায় আসতে না পারলে সে হয়তো রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখাবে।

২০১৭ সালের গ্রীষ্মে বার্সেলোনার অনিচ্ছায় ২২২ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে পিএসজিতে নাম লেখান নেইমার। তবে এক মৌসুম যেতে না যেতেই তিনি পিএসজি ছাড়তে মরিয়া হন। প্রথমে রিয়াল মাদ্রিদ বার্সেলোনা উভয়ই ছিল তাকে কেনার রেসে। ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়টি সর্বশেষ সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায়ই মনেপ্রাণে নাম লেখাতে চেয়েছেন। গ্রীষ্মে তার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়নি। দেখা যাক, ২০২০ সালে তিনি ন্যু ক্যাম্পে ফিরতে পারেন কিনা। বিবি?

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন