বিআইবিএমের গবেষণা

সিএমএসএমই ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকঋণের পরিমাণ কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৬-১৮ সালের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (সিএমএসএমই) এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকঋণের পরিমাণ বাড়লেও ব্যাংক খাতের মোট ঋণের অনুপাতে তা কমেছে।

২০১৬ সালে সিএমএসএমইদের মধ্যে বিতরণকৃত ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৯ দশমিক ০৮ শতাংশ, ২০১৮ সালে তা কমে ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশে নেমেছে। ২০১৬ সালে নারী উদ্যোক্তাদের দেয়া ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ২০১৮ সালে তা নেমেছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশে।

গতকালফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি অ্যান্ড ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি অব উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরস ইন স্মল ফার্মস অ্যান্ড অ্যাকসেস টু ফরমাল সোর্সেস অব ফিন্যান্স শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়। সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এসএম মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

সেমিনারে আলোচক হিসেবে অংশ নেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত--খোদা, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সাবেক এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক এসএ চৌধুরী, বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলি, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী আখতার আসিফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্রকল্পের বিনিয়োগ উপদেষ্টা টিনা এফ জাবীন।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন। চার সদস্যের গবেষক দলে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন ও তাহমিনা রহমান এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আনোয়ার ফারুক তালুকদার। 

উদ্বোধনী বক্তব্যে এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং উন্নয়নে নারী উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এসব দিক বিবেচনায় এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এর পরও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বিভিন্ন বাধার কারণে নারী উদ্যাক্তার সংখ্যা তুলনামূলক কম।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত--খোদা তার বক্তব্যে আর্থিক শিক্ষার আগে নারীদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত করার ওপর জোর দেন। বিআইবিএমের সাবেক এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক এস এ চৌধুরী নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বীমা সুবিধা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ততা আরো বাড়াতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক শিক্ষা, দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হতে হবে। এ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সহজ হবে।

নারীদের আরো বেশি অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলি। এ সময় ঋণ পেতে জামানত ও গ্যারান্টার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ।

ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তায় গবেষণা প্রতিবেদনে বেশকিছু প্রস্তাবের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন