পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়া বড় ধরনের সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত সাইবার হামলা থেকে বাদ যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে হামলার উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। খবর বিবিসি ও সিএনএন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল জর্জিয়ার প্রায় দুই হাজার ওয়েবসাইটে একযোগে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। এ তালিকায় দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলও রয়েছে। এমনকি দেশটির আদালতের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন মামলার নথি ও বাদী-বিবাদীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতেও সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি অনলাইন পেজ। এ তালিকায় দেশটির প্রেসিডেন্টের সরকারি ওয়েবসাইট, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও পেজ রয়েছে।
হামলার পর পর অনেক ওয়েবসাইটে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল শাকাশভিলির ছবি দেখা গেছে। ছবির নিচে লেখা ছিল, ‘আমি
ফিরে আসব’। এ কারণে দেশজুড়ে পরিচালিত সাইবার হামলার পেছনে মিখাইল শাকাশভিলি ও তার রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল মুভমেন্ট পার্টিকে দায়ী করছেন অনেকেই। তবে দলটির পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
অনলাইনে এ সাইবার হামলা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। দেশটির অনেকেই এ হামলার জন্য রাশিয়ান হ্যাকারদের ভূমিকা সামনে এনেছেন। প্রাথমিকভাবে এর পেছনে দায়ীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় ধরনের সাইবার হামলা ঠেকাতে জর্জিয়ান সরকারি-বেসরকারি ওয়েবসাইট ও পেজগুলোর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছিল না। তাই এসব ওয়েবসাইট ও পেজ নতুন করে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে।
জর্জিয়ার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইমেদিও গতকালের সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। চ্যানেলটির হেড অব নিউজ ইরাকলি চিখলাদেজ জানান, সাইবার হামলার সময় হঠাৎই সিগন্যাল চলে গিয়েছিল। এ কারণে প্রায় ঘণ্টাখানেকের জন্য চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রাখতে হয়েছে। হামলার জের ধরে দেশটির অন্য বেসরকারি চ্যানেল মায়েস্ত্রোর কম্পিউটার সিস্টেম বিকল হয়ে গেছে।
সাইবার সিকিউরিটি বিশ্লেষক অ্যালেন উডওয়ার্ড বলেন, এবারের মতো ব্যাপক পরিসরে সাইবার হামলা আগে দেখা যায়নি। হামলার ব্যাপকতা ও লক্ষ্যবস্তু বিবেচনায় নিয়ে এটিকে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সাইবার হামলা বলেই মনে হয়।