জৌলুস হারাচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ : কমছে বড় মাছের আধিক্য

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ। ১৯৬১ সালে খরস্রোতা কর্ণফুলীর ওপর বাঁধ দিয়ে গড়ে তোলা হয় কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। যার ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে সৃষ্ট হয় কৃত্রিম হ্রদ। পরবর্তী সময়ে এখানে মাছ চাষ শুরু করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এক সময় হ্রদে রুই, কাতলা, সরপুঁটি, ঘাউরা, বাঘাড়, মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা মাছের মতো দেশী-বিদেশী বড় মাছের আধিক্য ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই জৌলুস হারাতে বসেছে দেশের অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়গুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ হ্রদ। এর বিপরীতে বাড়ছে কাঁচকি, চাপিলার মতো ছোট মাছের আধিক্য।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি নদী উপকেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০০২-০৩ অর্থবছরে কাপ্তাই হ্রদে রুইজাতীয় মাছের উৎপাদন ছিল ২৫৮ দশমিক ৭৫ টন; যা বর্তমানে মাত্র ৫৩ দশমিক টনে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ছোট মাছের উৎপাদন ২০০২-০৩ অর্থবছরে ছিল হাজার ৪০০ দশমিক ১৯ টন, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে হাজার ৩৭৪ দশমিক ১৩ টনে। সেই হিসাবে রুইজাতীয় মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন ৮১ শতাংশ থেকে কমে শতাংশে চলে এসেছে। অন্যদিকে ছোট মাছ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ শতাংশে। আর ছোট মাছের মধ্যে বিশেষ করে কাঁচকি, চাপিলা মলা মাছের আধিক্যই সবচেয়ে বেশি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেলেদের অসচেতনতা এবং ছোট ফাঁসের কারেন্ট জাল ব্যবহার নাব্যতা সংকটের কারণেই দিন দিনই হ্রদে বড় মাছের উৎপাদন কমছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কাপ্তাই হ্রদে দুই প্রজাতির চিংড়িসহ মোট ৭৫ প্রজাতির মাছের আবাস। এর মধ্যে ৬৭ প্রজাতির মাছ দেশীয় এবং আট প্রজাতির মাছ বিদেশী। কাপ্তাই হ্রদে ২০০২-০৩ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ছিল হাজার ৫৬৬ টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৭৬ টনে। মূলত ছোট মাছের আধিক্যের ফলে উৎপাদন বেড়েছে।

রাঙ্গামাটি নদী উপকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, কাঁচকি, চাপিলা, কাঁটা মইল্যা, দেশী মলা, তেলাপিয়া, কালিবাউশ, আইড়, বাটা ফলি মাছ। এর মধ্যে কাঁচকি, চাপিলা, কাঁটা মইল্যা, দেশী মলা চার প্রজাতির মাছ ছোট। এছাড়া হ্রদে মজুদকৃত মাছের মধ্যে রয়েছে গ্রাস কার্প, সিলভার কার্প, কার্পিও, রাজপুঁটি, তেলাপিয়া, মোজাম্বিকা তেলাপিয়া, গিফট তেলাপিয়া, মহাশোল, আফ্রিকান মাগুর, বিগহেড কার্প থাই পাঙ্গাশ। এর মধ্যে আট প্রজাতির মাছ বিদেশী। কাপ্তাই হ্রদে ক্রমহ্রাসমান প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে রুই, কাতল, মৃগেল, বাঁচা, পাতি পাবদা বড় চিতল। আর বিলুপ্ত প্রজাতির মধ্যে রয়েছে দেশী মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা, তেলে গুলসা সাদা ঘনিয়া। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মধ্যে রয়েছে সিলন, দেশী সরপুঁটি, ঘাউরা, বাঘাইড়, মোহিনী বাটা দেশী পাঙ্গাশ।

প্রায় ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর আয়তনের হ্রদ বাংলাদেশের পুকুরগুলোর মোট জলাশয়ের প্রায় ৩২ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ মোট জলাশয়ের প্রায় ১৯ শতাংশ। কার্পজাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করাসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি বছরের মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। চলতি বছরও হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি সুষম বৃদ্ধির জন্য কাপ্তাই হ্রদে ৩০ টন পোনা ছেড়েছে বিএফডিসি।

রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়ার মতে, হ্রদ সৃষ্টির অর্ধশতাব্দী পর<

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন