এভিয়েশন শিল্পের বিকাশে বিমান পথপ্রদর্শক : বিমান প্রতিমন্ত্রী

বণিক বার্তা অনলাইন

জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ অপারেশনের পরিধি এবং ব্যপ্তি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’ প্রতিষ্ঠার পর হতে বিগত ৪৮ বছরে বিমান নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার সময় অতিবাহিত করলেও তিনি দাবি করেন, দেশের এভিয়েশন শিল্পের বিকাশে বিমান পথপ্রদর্শক।

আজ সোমবার ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-মদিনা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। 

প্রসঙ্গত, আজ সোমবার চালু হওয়া এ রুটে বিমান ঢাকা থেকে মদিনায় সপ্তাহে তিনদিন যথাক্রমে শনি, সোম ও বুধবার এবং চট্টগ্রাম থেকে মদিনায় একদিন বৃহস্পতিবার একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

মাহবুব আলী জানান, বিমান বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক রুট গুলোর মধ্যে রয়েছে দুবাই, আবুধাবি, মাস্কট, দোহা, লন্ডন, কুয়েত, দাম্মাম, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ইয়াঙ্গুন, দিল্লী এবং কোলকাতা। আজ হতে ঢাকা-মদিনা-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে  বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর নেটওয়ার্ক সম্প্রারণের আরো একটি ধাপ পূর্ণ হল।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মদিনায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর রওজা শরীফ পরিদর্শন, হজ ও ওমরাহ পালন করতে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ বাংলাদেশী প্রতিবছর সৌদি আরব গমন করেন। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমুহে বিভিন্ন পেশার প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক ভাইয়েরা বসবাস করেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের যাতায়াত ও  দেশের সাথে  প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের যোগাযোগ আরও সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও ঢাকা -মদিনা সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে আন্তরিকভাবে আগ্রহী। তারই ফলশ্রুতিতে আজ ঢাকা-মদিনা- ঢাকা সরাসরি ফ্লাইট চালু হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহে ও নির্দেশনায় বিমান বহরে ১০টি সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবছরই আরও ২টি নতুন প্রজন্মের বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিম লাইনার বহরে যুক্ত হবে। বহর পরিকল্পনা একটি চলমান প্রক্রিয়া, এই ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমরা কানাডা কর্মাসিয়াল কোম্পানি (সিসিসি) হতে স্বল্প পাল্লার ০৩ টি নতুন ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ ক্রয় করেছি।  ২০২০ সালের মার্চ-জুন মাসের মধ্যে এই বিমানগুলো আমাদের বহরে সংযুক্ত হবে। সম্প্রসারিত এই বহর দিয়ে আমরা আমাদের চলমান রুটসমূহে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি সেই সাথে নতুন গন্তব্য সংযোজন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি।’

২০২০ সালে ম্যানচেস্টার, নারিতা, কলোম্বো, মালে এবং নিউইয়র্ক  ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। দেশের এভিয়েশন শিল্প বিকাশে বিমানের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে সকলের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বিমান সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বিমানের পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মধ্যপ্রাচ্যে বিমানের যে সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে, সেই বাজার বিমানের দখল করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) ইনামুল বারী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির হোসেন প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বিমানবন্দরে যাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় কালে ঢাকা-মদিনা-ঢাকা উদ্বোধনী ফ্লাইটের যাত্রীরা রুটে ফ্লাইট চালু হওয়ায় তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিমান প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। প্রতিমন্ত্রীও মদিনায় ভ্রমণরত যাত্রীদের কাছে কাবা শরীফ ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা শরীফ জিয়ারতের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করতে অনুরোধ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন