সরকারি প্রকল্পে ৩০% কোটা দাবি স্থানীয় সৌরপণ্য উৎপাদনকারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি সৌর কর্মসূচিতে দেশীয় সোলার প্যানেল ও মডিউল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোর জন্য ৩০ শতাংশ বিশেষ কোটা বরাদ্দ চায় সোলার মডিউল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এসএমএমএবি) এটিসহ মোট সাতটি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবেসোলার খাতের উন্নয়নে স্থানীয় প্রস্তুতকারীদের যৌক্তিক কোটা বরাদ্দ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

দেশে সোলার মডিউল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী এ সংগঠনের সভাপতি মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন বলেন, এ খাতে গড়ে ওঠা স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা দেশের সমগ্র চাহিদার জোগান দেয়ার পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে সহায়ক কোনো সরকারি নীতিমালা না থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠানই উৎপাদনে আগ্রহ হারাবে।

সম্প্রতি পিভি (ফটোভোল্টেইক/সোলার) মডিউল রফতানিতে ১০ শতাংশ ভর্তুকি ঘোষণা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুনাওয়ার মঈন বলেন, গুণগত মান বজায় না রেখে বর্তমানে চীন ও ভারত থেকে কম দামে সোলার প্যানেল আমদানি করা হচ্ছে, যা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসম প্রতিযোগিতায় ফেলছে। এ বিষয়টিও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসএমএমএবির সাধারণ সম্পাদক গোলাম বাকী মাসুদ। সংগঠনটির অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে এ খাতে দেশী শিল্পকে উৎসাহিতকরণে ন্যূনতম ১০-১৫ বছর মেয়াদি ঋণ প্রদান, গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে সর্বনিম্ন ৪-৫ শতাংশ সুদের হার নির্ধারণ, এ খাতের বিকাশে মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে ত্রৈমাসিক সভার আয়োজন, স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় সোলার প্যানেল আমদানি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন, আমদানীকৃত সৌর যন্ত্রাংশের মান নিশ্চিতকরণে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন ও এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব প্রতিষ্ঠা, স্রেডাসহ সরকারের সোলার বিষয়ক সব কমিটিতে এসএমএমএবির একজন প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সরকারের রুফটপ প্রকল্প, সৌর সেচ প্রকল্প, নেট মিটারিং প্রকল্প, টিআর/কাবিখা, কাবিটা, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণসহ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রিক সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দেশীয় উৎপাদনকারী শিল্পের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং এ বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবহারকারীদের ট্যাক্স-ভ্যাট অব্যাহতিসহ উৎসাহব্যঞ্জক আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।

এসএমএমএবির নেতারা বলেন, সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে চাহিদার ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করা হবে, যার পরিমাণ হবে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদিত ৬০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের সিংহভাগ (৩৭০ মেগাওয়াট) আসছে প্রায় ৬৮ লাখ সোলার প্যানেল থেকে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকল্প হিসেবে পরিচিত।

সংগঠনের নেতারা বলেন, সংগঠনটির নয়টি সদস্য প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের প্যানেল উৎপাদনে সক্ষম, যা দেশের বার্ষিক চাহিদার সমান। বর্তমানে দেশীয় বাজারে চীন ও ভারত থেকে আমদানীকৃত মানহীন কম দামি প্যানেল স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন নিরুৎসাহিত করছে অথবা তারা রফতানির দিকে ঝুঁকছে। ব্যাপক হারে আমদানীকৃত নিম্নমানের এসব সোলার প্যানেলের মান নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএমএমএবির সিনিয়র সহসভাপতি মশিউর রহমান, সহসভাপতি ইঞ্জি. আনসার উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ আবদুল হালিম মৃধা, সদস্য তানজিল চৌধুরী প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন