কার্তিকেও বর্ষার মতো বৃষ্টি ঝরছে। এ বৃষ্টি বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে দিনাজপুরের বিরামপুরের আলুচাষীদের। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় পচন ঠেকাতে বীজ আলু তুলে ফেলছেন তারা। তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে বীজ আলু পচনের আশঙ্কা থাকলেও তা খুব মারাত্মক নয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলে সাধারণত মধ্য কার্তিক থেকে আলুর বীজ লাগানো শুরু হয়। তবে ভরা মৌসুমে দাম না পাওয়ায় অনেকে আগাম আলু চাষ করেন। এ কারণে এরই মধ্যে বিরামপুরে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ রোপণ হয়েছে। এবার এ উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বীজ রোপণকারীরা। অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে বীজের পচন ঠেকাতে তারা জমি থেকে আলু তুলে ফেলছেন।
সরেজমিনে উপজেলার মুকুন্দপুর, হাবিবপুর, প্রস্তমপুর, সারাঙ্গপুর, ভেলারপাড়া, জোত-জয়রামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ জমিতেই পানি জমে গেছে। তাই কৃষকরা ছাতা মাথায় জমি থেকে বীজ আলু তুলে ফেলছেন।
মাধবপাড়া গ্রামের আলুচাষী আবুল হোসেন বলেন, প্রতি বছর ভালো দাম পাই বলে আগাম আলু লাগাই। গত বুধবার সকালে ৪০ শতক জমিতে রোমানা জাতের হাইব্রিড আলুর বীজ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টির কারণে বিপদে পড়ে গেছি। জমি থেকে বীজ তুলে নিতে না পারলে সব পচে নষ্ট হয়ে যাবে। আমার মতো যারা আগাম আলু লাগিয়েছেন, তারা সবাই একই সমস্যায় পড়েছেন।
হবিবর রহমান নামের আরেক আলুচাষী বলেন, এবার আমি ১৪ বিঘা জমিতে ৫৬ বস্তা আলুবীজ লাগিয়েছি। এ বীজের দাম পড়েছে প্রায় ৯৮ হাজার টাকা। সার, শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ মিলিয়ে শুধু আলুবীজ লাগাতেই প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে আমার ক্ষতি হয়ে গেল। এখন সব আলু তুলে নিতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিকছন চন্দ্র পাল বলেন, এবার বিরামপুরে উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেকে আগাম আলু লাগানো শুরু করেছেন। বৃষ্টিপাতের কারণে রোপণকৃত কিছু জমির আলুর বীজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি নয়।