বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি এখনো।
তার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে গবেষণায় অবহেলা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার চেয়ে আর্থিকসংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িয়ে পড়ছে বেশি।
শিক্ষকরা গবেষণার চেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি।
তাছাড়া লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রতিযোগিতায়ও লিপ্ত একটি দল।
ফলে গবেষণার চেয়ে ভবন নির্মাণ বা অর্থ ব্যয় করার খাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিক দৃষ্টি।
গতকাল বণিক বার্তায় প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটি এর পক্ষেই সাক্ষ্য দেয়।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ৪৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৮ হাজার ৮৮ কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট ঘোষণা করে ইউজিসি।
এর মধ্যে গবেষণায় বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
যদিও উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা।
গবেষণা খাতে এমন অবহেলার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ইউজিসির পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
গবেষণা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে গতি আনার বিকল্প নেই।
ইউজিসির পক্ষ থেকেও অভিযোগ আছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারছে না।
এক্ষেত্রে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকলেও পূর্ণাঙ্গ গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই।
ফলে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরাও আগ্রহ হারাচ্ছেন।
তাই অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দিকটিও বিবেচ্য।
গবেষণাগারের উন্নয়ন করে আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রমে গতি আনতে হবে।
ইউজিসির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।
উদ্ভাবনমূলক গবেষণার অপ্রতুলতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলাও কম দায়ী নয়।
প্রকৃতপক্ষে দায়সারা গোছের শিক্ষা কার্যক্রম কোনোভাবেই দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গতি সঞ্চার করবে না।
মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা।
তাছাড়া গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি সম্ভব।
তাই মানসম্পন্ন গবেষণার লক্ষ্যে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো অপরিহার্য।
গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান উৎপাদন, বিভিন্ন প্রকাশনার মাধ্যমে সেই জ্ঞান সংরক্ষণ ও পাঠদানের মাধ্যমে জ্ঞান বিতরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শুধু পুরনো জ্ঞান বিতরণ হচ্ছে, নতুন জ্ঞানের আবিষ্কার হচ্ছে না।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তার বেশির ভাগই খরচ হয় বেতন-ভাতা ও অবকাঠামো নির্মাণে।
গবেষণায় বরাদ্দ নামমাত্র।
পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ গবেষণা ল্যাব নেই।
ভালো গবেষণার জন্য পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা নেই।
পদোন্নতি
- পারিবারিক ব্যবসা টেকসই না হওয়ার মূলে রয়েছে কাঠামোগত সমস্যা
- ম্যালেরিয়ার বাহক নিয়ন্ত্রণে গবেষণা জোরদার করা প্রয়োজন
- লোকসান কমাতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার নয়, দুর্নীতি দমন করতে হবে
- স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সচেতনতা বাড়াতে হবে
- ভেতর থেকেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার প্রয়োজন
- প্রবাসী আয় বাড়িয়ে যেভাবে রিজার্ভ সংকট কমানো যেত