টানা ১০ মাস রফতানি কমল জাপানের

বণিক বার্তা ডেস্ক

সেপ্টেম্বর নিয়ে টানা ১০ মাস রফতানি সংকুচিত হওয়ায় আগামী সপ্তাহে মুদ্রানীতি সহজ করতে পারে ব্যাংক অব জাপান। খবর রয়টার্স।

প্রলম্বিত চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ ও চীনের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়ায় বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে। এদিকে চলমান প্রতিকূল আর্থিক ও বাণিজ্য অবস্থার কারণে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ জাপানি অর্থনীতির ভবিষ্যৎ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশটির রফতানি গত বছরে একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি ও উড়োজাহাজ সরঞ্জাম ও দক্ষিণ কোরিয়ায় সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রাংশের রফতানি কমায় দেশটির সার্বিক রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

যতটা পূর্বাভাস করা হয়েছিল, সেপ্টেম্বরে দেশটির রফতানি তার চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি কমেছে। এছাড়া ২০১৫-এর অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের নভেম্বরে দেশটির রফতানি একটানা রেকর্ড ১৪ মাস কমেছিল। বর্তমান রফতানি হ্রাস তার চেয়েও লম্বা সময়জুড়ে চলছে। অন্যদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে টানা দুই মাস দেশটির রফতানির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। গত শুক্রবার নিজেদের অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপান সরকার, এরপর রফতানির এমন সংকোচনের খবর এল, সব মিলিয়ে দেশটির রফতানি নিয়ে উদ্বেগ আরো বাড়ল। গত মাসে রফতানি বর্ধিত হারে কমায় অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সরকারকে প্রয়োজনে কিছু আর্থিক পদক্ষেপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির কিছু নীতিনির্ধারক।

এদিকে সেপ্টেম্বরের পর দেশটির রফতানি আরো একবার কমার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেইজি ইয়াসুদা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইউচি কোদামা। তিনি বলেন, জাপানের অর্থনীতি সার্বিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে মুদ্রানীতি সহজ করার কথা উঠতে পারে।

অঞ্চল হিসেবে জাপানের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক পার্টনার চীন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনে দেশটির রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। গাড়ির যন্ত্রাংশের চালান কমায় এ নিয়ে সাত মাস দেশটিতে জাপানের রফতানি কমল। যদিও ইলেক্ট্রনিক চিপের রফতানি বেড়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সিউলের সঙ্গে টোকির বাণিজ্যদ্বন্দ্ব চলছে।

অন্যদিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। গাড়ি ও এয়ারক্রাফট মোটরস ও যন্ত্রাংশের রফতানি কমায় এমনটি হয়েছে। একই সময়ে দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কমেছে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৫৬ হাজার ৪১০ কোটি ইয়েনে (৫২০ কোটি ডলার) দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, মার্কিন কৃষিপণ্য ও জাপানের যন্ত্রাংশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক কমাতে গত মাসের শেষের দিকে ওয়াশিংটন ও টোকিওর মধ্যে একটি সীমিত বাণিজ্যচুক্তি হয়েছে।

এদিকে বছরওয়ারি হিসাবে জাপানের মোট আমদানি কমেছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ, যা পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য কম। ওই সময়ে দেশটির মোট আমদানি ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস করা হয়েছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন