সঠিক প্রশ্ন কীভাবে অন্বেষণ করতে হয়

এস্তার দুফলো

যদিও আজকে আমার গবেষণার বিষয় উন্নয়ন অর্থনীতির র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়ালসের (আরসিটি) সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত, তবে সত্য হলো, র্যান্ডমাইজড ট্রায়ালস আমাকে দিয়ে প্রথম শুরু হয়নি এবং আমিও র্যান্ডমাইজড ট্রায়ালস দিয়ে গবেষণা শুরু করেনি।

এমআইটিতে স্নাতক শিক্ষার্থী থাকাকালে মাইকেল ক্রেমার (যিনি তখন সহকারী অধ্যাপক ছিলেন) এরই মধ্যে উন্নয়ন অর্থনীতিতে নতুন প্রজন্মের প্রথম আরসিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখন এটি কেনিয়ার বিখ্যাত টেক্সটবুক পাঠ্য। এদিকে আরসিটির আরেক সারথি হলেন অভিজিৎ ব্যানার্জি।

কষ্টক্লিষ্ট ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চেষ্টা-ভুলের রজ্জু বেয়ে কঠিন পথ পাড়ি দেয়া শিখেছেন বিধায় আমি তাদের উভয়ের লড়াইটি গভীরভাবে অবলোকন করেছিলাম। কাজেই অ্যাপ্রোচ বা পদ্ধতি (আরসিটি) আমার কাছে অবিশ্বাস্য রকম সম্ভাবনাময় মনে হয়েছিল। কিন্তু একজন স্নাতক শিক্ষার্থী হিসেবে তখনো এটিকে নিজের গবেষণার বিষয় ভাবিনি। প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বর্ষের শেষের দিকে গ্রীষ্মের অবকাশে দুটি কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম। মাইকেল আহ্বান জানিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় আরসিটির কাজে, যেটিতে তিনি কেনিয়ায় নারীদের একটি দল নিয়ে গবেষণাকর্মের চিন্তা করছিলেন। অন্যদিকে অভিজিৎ আমাকে ভারতে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে এক জরিপে তার সহযোগী হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সফটওয়্যার ইন্ড্রাস্টি প্রজেক্টের কাজ অধিক ভালো মনে হওয়ায় আমি ভারতে গিয়েছিলাম এবং আরসিটিতে কাজ করার প্রথম সুযোগ হাতছাড়া করেছিলাম। আমি স্পষ্টভাবে ঠাহর করতে পারিনি যে প্রবণতাগুলো কোন দিকে যাচ্ছিল। 

মনে করেছিলাম কেনিয়ায় আরসিটির কাজ আমার প্রচুর সময় নষ্ট করবে এবং আমার নিজের গবেষণা শুরুর জন্য খুব একটা ফুরসত পাব না। আমি একটি গবেষণা বিষয় উন্নয়নে আগ্রহী ছিলাম, প্রকৃত অর্থে যেটি আমার হবে। এটি এজন্য যে সত্যিই আমি গবেষণা করতে পারি কিনা, তা যাচাই করা। আমি এমআইটিতে কোর্সওয়ার্ক নিয়ে ভালোভাবে প্রস্তুত ছিলাম, কারণ ফ্রান্সে যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলাম, তা ছিল অধিকতর কারিগরি, যেটি অধিকাংশ মার্কিন শিক্ষার্থী সাধারণত পিএইচডি পর্যায়ে পড়েন।

কাজেই ওই অংশ আমার জন্য অনেক সহজ ছিল। কিন্তু আমি হতাশাজনক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলাম, যখন ইকোনমেট্রিকস ক্লাসের জন্য একটি প্রয়োজনীয় টার্ম পেপার লেখার চেষ্টা করছিলাম। সত্যি বলতে কি, ওই বিষয়ে প্রথমে আমার ধারণা খুব অস্পষ্ট ছিল, তা সত্ত্বেও আমি কিছু উন্নতি করেছিলাম। তবে আমি আটকে গিয়েছিলাম যখন সেগুলো আসলে কী বোঝায়, তা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের পালা এসেছিল। পেপার পেশ করার নির্ধারিত সময়ের দুই বা তিন সপ্তাহ আগে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে এটিকে একটি পেপার হিসেবে উপস্থাপন সম্ভব নয়। সেই বিবেচনায় ভাবলাম, হয় আমাকে একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে হবে অথবা বিষয় পরিবর্তন করতে হবে। প্রায় এক সপ্তাহ আমি দুটোর কোনোটিই করতে পারিনি এবং বলতে গেলে পুরোপুরি নিশ্চল ছিলাম। অবশেষে বিভিন্ন ডাটা সেট ব্যবহার করে একটি পেপার প্রতিলিপি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু ওই সপ্তাহে আমার মনে একটি জোরালো সংশয় জাগল যে পেশাদার গবেষক হিসেবে সত্যি আদৌ আমি গবেষণা চালিয়ে যেতে পারব কিনা।

আমার বড় ভাই কোলাসকেযিনি ফ্রান্সে দর্শনের অধ্যাপক এবং তার চেয়ে বড় কথা, বিদ্যায়তনিক জগতে আমার দেখা অন্যতম বাস্তববাদী মানুষযখন জিজ্ঞেস করেছিলাম একাডেমিক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে একজনকে কীভাবে এগোতে হবে, তখন তিনি আমাকে দুটি পরামর্শ দিয়েছিলেন।

তার প্রথম পরামর্শ ছিল, ‘প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা লেখো।আক্ষরিক অর্থে কীভাবে তিনি নিজের অভিসন্দর্ভ লিখেছিলেন, তারই বয়ান এটি। তিনি একটি পঞ্জিকায় ছুটির দিনগুলো চিহ্নিত করে রাখতেন, যাতে একটি সুনির্দিষ্ট ছুটির দিনে দুই পৃষ্ঠা বাড়তি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন