চলতি বছরের ২৮ মার্চ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের এফআর টাওয়ারে অগ্নিদুর্ঘটনায় কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবসা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার প্রভাবে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়িক কার্যক্রমে গতি বাড়াতে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানির ওয়েভ ও সানলাইট ব্র্যান্ডের অধীনে নতুন কয়েকটি পণ্য বাজারে আনা, ঢাকা শহরে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ ও পরিচালনা করা, নিজস্ব কমার্শিয়াল টাওয়ারে নতুন প্রধান কার্যালয় ও ডিস্ট্রিবিউশন হাব স্থাপন এবং বিদ্যমান ইউনিট-১-এর পাশাপাশি নতুন একটি ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা।
এসব কাজে কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ কী
পরিমাণ বিনিয়োগ করবে এবং কোম্পানির মুনাফা সক্ষমতায় এ বিনিয়োগের প্রভাব কেমন হবে, সে
বিষয়ে কোম্পানিটি জানিয়েছে,
বিনিয়োগের পরিমাণ ও মুনাফার বিষয়টি এখনো
সুনির্দিষ্টভাবে নিরূপণ করা হয়নি। তবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, সমাপ্ত
হিসাব বছরের জন্য স্টক লভ্যাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার পেছনে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের
উদ্দেশ্য অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য মোট
১২ শতাংশ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে
৫ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট
মুনাফা হয়েছে ৪ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা,
আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এ
হিসাবে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৩ কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার
টাকা বা ৩৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের
শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৩৫ পয়সা। এ হিসাবে সমাপ্ত হিসাব বছরে
ইপিএস কমেছে ৫২ পয়সা বা ৩৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট
সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে
৩৩ টাকা ১৮ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩২ টাকা ৩৬ পয়সা।
উল্লেখ্য, এফআর
টাওয়ারের ২০, ২১ ও ২২ তলায় কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান কার্যালয় ছিল। ২১ তলায় ছিল
কোম্পানির শেয়ার অফিস। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার অফিস এফআর
টাওয়ার থেকে খিলক্ষেতে (খ-৯৯/১/বি, পূর্ব নামাপাড়া)
স্থানান্তর করা হয়।
২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের
জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ। এছাড়া ২০১৭
হিসাব বছরের জন্য ১৮ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল
কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ২৭ টাকা ৪০ পয়সা। সমাপনী দর ছিল ২৭
টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ২৪ টাকা
ও ৫৮ টাকা ২০ পয়সা।
১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত
কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫৮ কোটি ৮৪ লাখ ৭০
হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ কোটি ৮৮ লাখ
৪৭ হাজার ৩৮৬। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক
বিনিয়োগকারীদের কাছে ২২ দশমিক ২৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৪৭ দশমিক ৭৫
শতাংশ শেয়ার রয়েছে।