মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার অবস্থান দৃঢ় করার পর এবার আফ্রিকার দিকে নজর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ভূরাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির লড়াইয়ে মস্কোর অবস্থান শীতলযুদ্ধপরবর্তী সময়ে বেশ সবল অবস্থানে পৌঁছেছে।
গতকাল আফ্রিকার ৫০টিরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুতিন। এটি হচ্ছে আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে এই প্রথম কোনো বড়ো ধরনের সম্মেলন। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চলটিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও চীনের পাশাপাশি নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দেয়ার চেষ্টা করছে ক্রেমলিন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পল স্ট্রনস্কি বলেন, ক্ষমতা ও প্রভাব প্রদর্শনের অঞ্চল হিসেবে আফ্রিকার দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে রাশিয়া। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পশ্চিমা দেশগুলোর পলিসি ফোকাসের শূন্যতার সুযোগ নিয়ে আফ্রিকায় অবস্থান বাড়াচ্ছে রাশিয়া।
আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে যৌথ আমন্ত্রণে রাশিয়ার সোচিতে দুই দিনব্যপী সম্মেলনটি আয়োজিত হচ্ছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে আফ্রিকার স্নায়ুযুদ্ধকালীন সম্পর্ক ফিরে এসেছে। ওই সময় আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশই সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে মিত্র সম্পর্কে যুক্ত ছিল।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলন উপলক্ষে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত তাস নিউজ এজেন্সির কাছে পুতিন বলেন, এটি একটি অভূতপূর্ব বেঞ্চমার্ক ইভেন্ট। আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
কমিউনিস্ট জমানার সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়ার পর যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, সেখানে চীন, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যে উপস্থিতি জানান দিয়েছে, সেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রাশিয়া বেশ পিছিয়েই ছিল। ২০১৮ সালে আফ্রিকার সঙ্গে ২ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল রাশিয়ার, যেখানে ইইউর ৩০ হাজার কোটি ইউরো বা ৩৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ও চীনের ২০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিনিয়োগের এক-তৃতীয়াংশ ছিল রাশিয়ার।
দক্ষিণ আফ্রিকার ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান সিগন্যাল রিস্কের পরিচালক রোনাক গোপাল দাস বলেন, মস্কোর প্রভাব বাড়বে, বড় আকারে নয় বরং ধীরে ধীরে। আমি মনে করি না, আফ্রিকায় চীনের যে প্রভাব রয়েছে, তার ধারেকাছে আসতে পারবে রাশিয়া।
সিরিয়ায় সফল হস্তক্ষেপের পর ওয়াশিংটনের দৃঢ় অবস্থানের অনুপস্থিতিতে আফ্রিকায় নজর দিয়েছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতি বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এদিকে রাশিয়া এর আগে