ফেসবুকে নিরাপদ থাকতে করণীয়

কখনো কি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের চেষ্টা হয়েছে? অথবা অপরিচিত কোনো এলাকা বা ডিভাইস থেকে লগইন হয়েছে, যা মনে করতে পারছেন না? কিংবা ফেসবুক থেকে আপনার অজান্তেই কারো কাছে বার্তা চলে যাচ্ছে? বেশির ভাগ সময় ব্যবহারকারীর অসতর্কতার কারণে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। খোয়া যায় ব্যক্তিগত তথ্য এবং পড়তে হয় অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায়। ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হলেই এসব ঝামেলা এড়ানো যায়। ফেসবুকে নিরাপদ থাকতে যে নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে, তা নিয়ে আজকের আয়োজন

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন

ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কিছু তথ্য দিতে হয়। এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে ই-মেইল, ফোন নম্বর কিংবা পাসওয়ার্ড ইত্যাদি। আবার লগইন করার জন্য ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড দরকার হয়। এসব তথ্যের কোনো একটা ভুলে গেলে ফেসবুকে লগইন করা সম্ভব হয় না। এখন প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়েছে। বেড়েছে সাইবার হ্যাকারদের দৌরাত্ম্য। তাই অনেকে না জেনেই হ্যাকারদের কবলে পড়ছেন। হ্যাকাররা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে অনেকের ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড। তারা অনুমতি ছাড়াই ঢুকে পড়ছে অন্যের অ্যাকাউন্টে। এক্ষেত্রে হ্যাকারদের দরকার হচ্ছে শুধু দুটি জিনিস-মেইল ও পাসওয়ার্ড। ফেসবুক ব্যবহারকারী চাইলে হ্যাকারদের হাত থেকে নিরাপদ থাকতে পারেন। নিরাপদ রাখতে পারেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। এজন্য টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করতে হবে। ফিচারটি চালু রাখলে প্রতিবার ফেসবুকে লগইন করার জন্য তিনটি জিনিস দরকার হবে। এগুলো হলো ই-মেইল, অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড এবং লগইনের সময় মোবাইলে আসা সাময়িক পিন কোড। হ্যাকাররা হাতিয়ে নেয়া ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুকে লগইন করতে গেলে তাত্ক্ষণিক আপনার মোবাইলে একটি পিন কোড যাবে। ওই পিন কোড কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে অ্যাকাউন্টে লগইন হবে না।

যেভাবে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করবেন

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন লগইন অ্যাপ্রুভাল চালু করতে প্রথমে ফেসবুকে সাইনইন করুন। এরপর ফেসবুক  Settings>Security and Login সেকশনে থাকা Two-Factor Authentication-এর Edit অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করুন। অথবা সরাসরি নিচের লিংক https://www.facebook.com/settings?tab=security ভিজিট করলেও অপশনটি পাবেন।

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ফিচার সফলভাবে চালু হলে এরপর থেকে নতুন কোনো ব্রাউজারে লগইন করতে গেলে মোবাইলে পাঠানো নিরাপত্তা পিন কোড চাইবে এবং সেটি প্রবেশ করানোর পর ব্রাউজারে সেভ অপশন দেখাবে। আপনার নিজের পার্সোনাল কম্পিউটার (পিসি) বা মোবাইল হলে ব্রাউজার ফেসবুক সার্ভারে সেভ করে নিতে পারেন। এতে প্রতিবার লগইন করার সময় মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে পাঠানো পিন কোড দিতে হবে না। শুধু ইউজারনেম বা ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়েই লগইন করা যাবে।

মেসেঞ্জারে পাঠানো অপরিচিত ব্যক্তির লিংক এড়িয়ে চলুন

ফেসবুকে অপরিচিত অনেকেই বিভিন্ন লিংক পাঠায়। এসব লিংকে ক্লিক করবেন না। এগুলো হ্যাকিং টুলসংবলিত লিংক হতে পারে। এমন হলে খুব বড় ধরনের বিপদে পড়তে পারেন। তাই ফেসবুকে সবসময় অপরিচিত ব্যক্তির পাঠানো লিংক এড়িয়ে চলুন।

লগইন নোটিফিকেশন অপশন চালু রাখুন

ফেসবুকে লগইন নোটিফিকেশন অপশন চালু রাখলে বাড়তি সুবিধা পাবেন। এতে কেউ আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করার চেষ্টা করলে আপনার ই-মেইল ও মোবাইল নম্বরে নোটিফিকেশন চলে যাবে। অ-অনুমোদিত লগইনের নোটিফিকেশন পেলে তত্ক্ষণা ফেসবুকের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে Sign Out from other devices করে দেবেন। এর ফলে হ্যাকার আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট হয়ে যাবে এবং আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকবে।

ট্রাস্টেট কন্টাক্ট যোগ করুন

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার আরো একটি উপায় হলো ট্রাস্টেট কন্টাক্ট। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ট্রাস্টেট কন্টাক্ট যোগ করে রাখলে হ্যাকিংয়ের শিকার হলেও অ্যাকাউন্ট যেকোনো সময় উদ্ধার করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি যখনই ফেসবুকে লগইন করতে পারবেন না, তখনই ট্রাস্টেড কন্টাক্টের সহায়তা নিতে পারবেন। ট্রাস্টেড কন্টাক্টে যোগ করা বন্ধুদের কাছে আলাদা আলাদা পিন কোড যাবে। তাদের থেকে পিন কোড নিয়ে সাবমিট দিলেই আপনি নতুন পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন থেকে সাবধান

বিভিন্ন পণ্যের প্রচার-প্রচারণার অন্যতম ডিজিটাল প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে ফেসবুক। হ্যাকাররা ফেসবুকে ভুয়া পণ্যের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যবহারকারীদের ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে রিডিরেক্ট করতে পারে। এতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেহাত হতে পারে। কাজেই ফেসবুকে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন না হলে এড়িয়ে চলুন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন