বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্য

ফারহাত আফজাল

শাসনক্ষমতায় ব্রিটিশরা আসার অনেক আগে থেকে বাংলা অঞ্চলের শিল্প স্থাপত্যরীতি ছিল সমৃদ্ধ সুন্দর, চমত্কার। বাংলার বিভিন্ন প্রত্নস্থলের ধ্বংসাবশেষ থেকে এটি স্পষ্ট যে অঞ্চলের ইতিহাসের সূচনাপর্ব থেকে এখানকার ইমারত শিল্পের একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক চর্চা চলে এসেছে।

উদাহরণস্বরূপ মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষ একটি অন্যতম প্রমাণ যে এমনকি প্রাচীন সময়েও নির্মাতারা ইট তৈরি ব্যবহারে অতি উন্নত কৌশল নিয়ে স্থাপনার কাজ করেছিল। সোমপুর মহাবিহারেরভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার হিসেবে বিবেচিতস্থিতিবোধ (ওরিয়েন্টেশন) কাঠামোর অনুপাত নির্মাতাদের স্থাপত্য কৌশলের প্রতি চরম সংবেদনশীলতার বিষয়টি তুলে ধরে। আট থেকে বারো শতকের পাল শাসনামলে বাংলায় স্থাপত্য, ভাস্কর্য, পোড়ামাটির অলংকরণ এবং চিত্রকলা ব্যাপকতরভাবে বিকাশ লাভ করেছিল। সুলতানি আমলে বাংলায় একটি স্বাতন্ত্র্যিক ভাষা, সংস্কৃতি স্থাপত্যের উন্নয়ন ঘটেছিল।

মোগলদের আগমনে রাজনৈতিক কেন্দ্রীকরণের উন্মেষ ঘটেছিল। তখন অঞ্চলের স্থাপত্যরীতি বলতে বোঝানো হতো দিল্লির নির্দেশনায় বাংলার শাসক কর্তৃক প্রয়োগকৃত ধারণা আদর্শ। প্রথমবারের মকো অঞ্চলের (বাংলা) স্থাপত্যিক ঐতিহ্য ভেঙে গিয়েছিল, যা ব্রিটিশ শাসনে আরো অব্যাহত ছিল। ইউরোপীয়দের আগমনে বাংলার স্থাপত্যে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল হয়। পর্তুগিজরা হলো প্রথম ইউরোপীয় জনগোষ্ঠী, যারা ব্যবসায়ী মিশনারি হিসেবে বাংলায় এসেছিল। এক শতক পরে পর্তুগিজদের অনুসরণে ডাচ, ব্রিটিশ ফরাসিরা এসেছিল। ড্যানিস, আর্মেনীয়, গ্রিক জার্মানরাও অঞ্চলে বসতি গড়েছিল। অবশ্য ঔপনিবেশিক স্থাপত্য ব্রিটিশ স্থাপত্য প্রায় সমার্থক হয়ে যায়, যখন থেকে তারা এখনকার বৃহৎ ভূখণ্ড দখল করেছিল।

ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক সময়ে শহর হিসেবে কলকাতা দ্রুত ব্যাপকভাবে গুরুত্ব অর্জন করেছিল। এর কারণ জনপথে ভালো যোগাযোগের ফলে বৃহত্তর বাণিজ্য সুযোগ থাকা। ফলে ১৭৭৩ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত এটি ভারতের ব্রিটিশ রাজধানী ছিল। কাজেই এটি বিস্ময়ের নয়, দুইশ বছরের ব্রিটিশ শাসনের সময়ে বেলভেডিয়ার হাউজ, রাইটার্স বিল্ডিং এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়েলের মতো স্থাপত্যিকভাবে তাত্পর্যপূর্ণ অনেক ইমারত পশ্চিমবঙ্গে নির্মিত হয়েছিল।

সংজ্ঞাগতভাবে ঔপনিবেশিক স্থাপত্য হলো এমন এক স্থাপত্যরীতি, যেটি আসলে একটি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন