শিবালয়ের তেওটা রাজবাড়ি

একরাম হোসেন নাঈম

সুলতানি  মোগল যুগের পর বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঔপনিবেশিক শাসন। সীমাহীন লুটতরাজ, আধিপত্যবাদ বিস্তার আর সবকিছুর ওপর লাগামহীন হস্তক্ষেপ সময়ের বৈশিষ্ট্য। তবে এর বাইরে ব্রিটিশ শাসকদের সরাসরি প্রণোদনায় বাংলার নানা স্থানে গড়ে উঠেছিল অনেকগুলো নয়নাভিরাম স্থাপত্য। তার পাশাপাশি ব্রিটিশদের মদদপুষ্ট জমিদারদের তত্ত্বাবধানেও নানা স্থানে নির্মাণ করা হয় অসংখ্য ধর্মীয় লোকায়ত ইমারত। মানিকগঞ্জের শিবালয়ের অন্তর্গত তেওটা রাজবাড়ি এমনি এক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য, যা সময়ে নির্মিত হয়েছিল। যমুনা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাম তীর ঘেঁষে এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় পরিত্যক্ত তেওটা প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ টিকে আছে। আরিচা ফেরিঘাট থেকে দেড় মাইল উত্তরে একটি ধূলিময় আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে তেওটা গ্রামে যাওয়া যায়। সেখানে দুটি পুষ্করিণীর মাঝে এক সারিতে নির্মিত দুটি প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

টালির আচ্ছাদনযুক্ত, ঢালু ছাদসংবলিত দ্বিতলবিশিষ্ট কাছারি বাড়ি এবং অত্যন্ত সুরক্ষিত অবস্থায় নবরত্ন দোলমঞ্চ বিদ্যমান। উত্তর দিকের রাস্তা সংলগ্ন কাছারি ভবনটি জয়শংকর এস্টেটের অধিভুক্ত ছিল। শিলালিপি অনুসারে ভবনটি ১৯১৪ সালে নির্মিত। পূর্ব-পশ্চিমমুখী প্রায় ২১১৫ মিটার আয়তনবিশিষ্ট আয়তাকৃতির এই ইমারতটি পুরনো প্রাসাদের দক্ষিণ প্রান্তের ডান কোনায় অবস্থিত। অত্যন্ত সুন্দর সুচারুরূপে সংরক্ষিত ইমারতের উভয় তলার চারদিকের ঢালু ছাদ সম্পূর্ণরূপে রানীগঞ্জের লোহিত বর্ণের টালি দ্বারা আচ্ছাদিত। ভবনটির ঠিক পশ্চিমে পুষ্করিণীর দক্ষিণ-পূর্ব তীরে দক্ষিণে বারান্দাসহ একটি বর্গাকৃতির ছোট্ট চন্দ্রাতপ ধ্বংসস্তূপের মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যে দণ্ডায়মান রয়েছে। এটির ছাদও রানীগঞ্জের টালি দ্বারা আচ্ছাদিত।

তেওটা রাজবাড়ির দুই প্রাসাদের মাঝে অবস্থিত পুষ্করিণীর পূর্ব পাড়ে নির্মিত দোলমঞ্চটি এখনো সুসংরক্ষিত রয়েছে। ধরনের স্থাপত্যশৈলীসম্পন্ন দোলমঞ্চ বাংলাদেশের পুঠিয়ায় একটি এবং ডেভিড ম্যাকাচ্চিয়ন প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী পশ্চিম বাংলায় বিদ্যমান বহু নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। এটি ১৫ মিটার বর্গাকৃতির এবং তিন স্তর বা তিনতলাবিশিষ্ট একটি সুরম্য অট্টালিকা। ইমারতটির দ্বিতীয় তৃতীয় স্তর ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে উপরে উঠে গেছে। সর্বশেষ স্তরটির উপরিভাগ অলংকৃত নয়টি পিড় মন্দিরাকৃতির রত্নে শোভিত। এই নবরত্ন মন্দিরের প্রতি স্তরের প্রতি দিক অর্ধবৃত্তাকৃতির খিলানপথে উন্মুক্ত। ইমারতটির দেয়ালগাত্রে স্থাপিত এক শিলালিপি অনুসারে মন্দিরটি ১৮৫৮ সালে নির্মিত বলে জানা যায়। কিন্তু ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ইমারতটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১৯০৬ সালে এটি সংস্কার করা হয়।

পুকুরের পূর্ব পাড়ে প্রায় ৩০ মিটার ব্যবধানে নির্মিত রয়েছে তেওটার সবচেয়ে পুরনো প্রাসাদ। পশ্চিমমুখী এই প্রাসাদ উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৬০ মিটার

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন