ঔপনিবেশিক আমলে ঢাকার বিবর্তন

সাইফ উল হক

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ওড়িশার দেওয়ানি (জনপ্রশাসন পরিচালনার সুযোগ) লাভ করে। ফলে অঞ্চলের প্রশাসন পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে এবং ঢাকার গুরুত্ব কমে যায়। সময়ে ইংরেজরা তাদের প্রতিষ্ঠিত নগর কলকাতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে একেই রাজধানীতে পরিণত করে। অবশ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে নবাবদের রাজধানী মুর্শিদাবাদও গুরুত্ব পাচ্ছিল। দেওয়ানির দপ্তরগুলো মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে রাজধানী হিসেবে ব্রিটিশদের কাছে কলকাতার গুরুত্ব বোঝা যায় ১৯১২ পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকে। ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের দালানের গঠন কাঠামোর ক্ষেত্রে মোগল আমলের পার্থক্য লক্ষ করা যায়, পার্থক্য ছিল স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে রেনেসাঁ, নব্য ধ্রুপদী, ইংরেজ গথিকদের অলংকরণশৈলীকে প্রাধান্য দেয়ার ক্ষেত্রে। আবার কোথাও কোথাও স্থানীয়ভাবে শৈলী নির্মিত হয়েছে, যেমন ইন্দোসারাসেন। ইউরোপীয় ঘরানার ভবনগুলোকে স্থানীয় আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্যও নির্মাণশৈলীতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ইংরেজ শাসনামলের প্রথমদিকে ঢাকায় তাদের নির্মিত ভবন ছিল নিমতলী কুঠি (১৭৬৬), এটি ছিল নায়েব নাজিম বা উপশাসকদের বাসভবন। কুঠির পশ্চিম দরজার নাম ছিল নিমতলী দেউড়ি’, যা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এই তোরণে অ্যাংলো-মোগল ঘরানার স্থাপত্যশৈলী দেখা যায়। কোম্পানি শাসকরা মোগল সুবাদার ইসলাম খার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিদর্শন হলো পোগোজ স্কুল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় আর্মেনিয়ান ব্যবসায়ী নিকি পোগোজের উদ্যোগে স্কুলটি নির্মিত হয়। বর্তমান জায়গায় স্কুলটিকে নিয়ে আসা হয় এই শতকের শেষ দিকে। আরেকটি স্কুল হলো ব্রাহ্ম স্কুল, যার নাম বদলে হয় জগন্নাথ স্কুল এবং শেষ পর্যন্ত জুবিলী স্কুল নাম ধারণ করে। প্রথম বেসরকারি কলেজ স্থাপিত হয় ১৮৮৪ সালে, যার নাম ছিল জগন্নাথ কলেজ।

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকা কলেজকে আরো বড় জায়গায় স্থাপনের জন্য আগের জায়গা থেকে সরিয়ে রমনার উত্তরাংশের খোলামেলা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্জন হল নামে কলেজ বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯০৪ সালে এবং ১৯০৮ সালে এখানে স্থানান্তর হয় কলেজ। কলেজ ছাড়াও সেখানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল দুটি ছাত্র হল নির্মাণ করা হয়। লাল রঙের দ্বিতল কার্জন হলটি ইন্দো-সারাসেন রীতির ভবন, যেটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন হিসেবে নির্মাণ করেছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল হলগুলোও এমনিভাবে নির্মিত হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল পরে পলাশীর কাছে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। ধর্ম, প্রশাসন কিংবা শিক্ষাবিষয়ক ভবনগুলোর বাইরে আবাসিক ভবনেও ঔপনিবেশিক চরিত্র লক্ষ করা যায়। উনিশ শতকে নির্মিত দুটি বাসভবনে এর চিহ্ন রয়েছে, দুটি হল নদীর ধারে নির্মিত রূপলাল হাউজ (উনিশ শতকের প্রথমার্ধে) আহসান মঞ্জিল। রূপলাল হাউজের মালিক ছিলেন একজন আর্মেনিয়ান ব্যবসায়ী। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে রূপলাল রঘুনাথ দাস এই বাড়িটি কিনে নেন। তারা যে বাড়িটি নির্মাণ করেন এর থাম থামের ঊর্ধ্বাংশে

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন