তৃতীয় প্রান্তিক

করের কারণে মুনাফা কমেছে গ্রামীণফোনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কর বাবদ ৩৩০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হওয়ার কারণে টেলিকম খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের কর-পরবর্তী মুনাফা কমেছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির রাজস্ব আয়ে আগের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর সার্বিকভাবে এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে।

গ্রামীণফোনের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ৩ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কর বাবদ ৯৭০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে গ্রামীণফোন, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৪০ কোটি টাকা। কর বাবদ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা ১১৬ কোটি টাকা কমে ৭২৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৩৮ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ২৫ পয়সা।

এদিকে এ বছরের প্রথম নয় মাসে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫ হাজার ১৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। এ বছরের প্রথম নয় মাসে কর বাবদ কোম্পানিটির ২ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এ বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ টাকা ৩৮ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৫৩ পয়সায়।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল প্যাট্রিক ফলি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত আমরা ভালো ব্যবসা করতে সমর্থ হয়েছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে এনওসি স্থগিতের মতো সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি গ্রাহকদের মানসম্পন্ন সেবা প্রদান এবং দেশব্যাপী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক স্থাপন করাকেই আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি।

২০০৯ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৪ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ১২৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি ৩ লাখ ২২। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল গ্রামীণফোন শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৩১৪ টাকা ৫০ পয়সা। সমাপনী দর ছিল ৩১৫ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ২৮৪ টাকা ৭০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ দর ছিল ৪১৯ টাকা ৯০ পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন