আগামীর চাহিদা মেটাতে সংস্কারের গতি বাড়াতে হবে মিনা অঞ্চলকে: বিশ্বব্যাংক

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০৫০ সাল নাগাদ মধ্যপ্রাচ্য উত্তর আফ্রিকা (মিনা) অঞ্চলের জনসংখ্যা বর্তমানের দ্বিগুণ হবে। আগামীর কথা মাথায় রেখে অঞ্চলের সরকারগুলোকে সংস্কার কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন বিশ্বব্যাংকের মিনা অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাবাহ আরেজকি। তার মতে, বিশেষত অর্থনীতি উদারীকরণ, মনোপলি নজরদারি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারগুলোকে যত্নবান হতে হবে, যাতে অঞ্চলের বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। খবর দ্য ন্যাশনাল।

আরেজকি বলেন, অঞ্চলের বিকাশ শূন্য থেকে হচ্ছে না। বরং অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশ তুলনামূলকভাবে পরস্পরের সঙ্গে ভালোমতো সম্পৃক্ত। ওয়াশিংটনে দ্য ন্যাশনালের সঙ্গে আলোচনায় আরেজকি বলেন, অঞ্চলের দেশগুলো যেহেতু পরস্পরের সঙ্গে ভালোমতো সম্পৃক্ত, তাই বেসরকারি খাত পুনরায় সৃষ্টিতে নিজেদের মধ্যে একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতই অনুঘটকের ভূমিকা রাখে। এটি প্রথমত জাতীয় পর্যায়ে করা উচিত। কিন্তু সরকারগুলোকে একটি আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক কৌশলও হাতে নিতে হবে।

ডিজিটাল যুগের আবির্ভাব বাড়ন্ত জনসংখ্যার বিষয়টি মিনা অঞ্চলের দেশগুলোতে দ্রুতগতিতে পরিবর্তনের একটি আবেদন তৈরি করেছে। অঞ্চলের কোনো কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ৬০ শতাংশের বয়স ৩১ বছরের কম। ২০৫০ সাল নাগাদ মিনা অঞ্চলের শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে অতিরিক্ত ৩০ কোটি মানুষ। সময়ের মধ্যে অঞ্চলের অধিকাংশ দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

বিশ্বব্যাংকের মিনা অঞ্চলের প্রতিনিধি বলেন, ২০৫০ সাল নাগাদ অঞ্চলের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার অর্থ এখানে বড় ধরনের একটি সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে। বাজারগুলোর পরিসর বাড়তে শুরু করেছে। এখানকার উৎপাদনশীল অভ্যন্তরীণ খাত দেখা পেতে যাচ্ছে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের। এসব কিছু অঞ্চলটির জন্য সুখবর। সুতরাং সরকারগুলোর আরো বেশি সুযোগ তৈরির কোনো বিকল্প নেই। অর্থনীতিবিদ বলেন, এসব সম্ভাবনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না, যদি না অঞ্চলের সরকারগুলো একটি সহায়ক, ঝঞ্ঝাটমুক্ত প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করতে পারে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তাদেরকে মনোপলি নজরদারি, অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক প্রযুক্তিকে সংস্কারের কেন্দ্রে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

মিনা অঞ্চলের দেশগুলোর নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ, স্টার্টআপ কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতা, উদ্যোক্তাদের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে গৃহীত পদক্ষেপগুলো ইতিবাচক হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন আরেজকি। তিনি বলেন, অঞ্চলের জনসংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সরকারগুলোকে সংস্কার কার্যক্রমের গতি দ্বিগুণ করতে হবে। অন্যদিকে অঞ্চলে যেহেতু মনোপলির একটি ঐতিহ্য রয়েছে, তা নিধন করতে অর্থনীতিকে আরো বেশি উন্মুক্ত করতে হবে।

মিনা অঞ্চলে মনোপলির মোটামুটি ভালোই চল রয়েছে। প্রবণতা ঠেকাতে প্রয়োজনে শেরম্যান অ্যাক্টের মতো আইন প্রণয়নেরও সুপারিশ করেন আরেজকি। তিনি বলেন, মনোপলি ঠেকাতে অঞ্চলে আমাদের শেরম্যান অ্যাক্টের মতো কোনো আইন করা যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে হবে। আইনের আওতায় অর্থনীতির মনোপলিকরণ কিংবা মনোপলিকরণের চেষ্টা একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। প্রসঙ্গত, উদ্যোগ বাজারে সুষম প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে ১৮৯০ সালে শেরম্যান অ্যাক্ট পাস করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন