বোরহানউদ্দিনে সংঘর্ষ: ৫ হাজার জনকে আসামি করে পুলিশের মামলা

ভোলার বোরহানউদ্দিনে ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ‘ধর্ম অবমাননাকর’ ম্যাসেজ পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে চারজন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৫ হাজার লোককে।

বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রোববারের ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, বিশৃঙ্খলার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় চার থেকে পাঁচ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে সেখানে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে ভোলায় সবধরনের সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানিয়েছেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কেউ যেন কোন ধরনের সভা সমাবেশ বা মিছিল না করে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

ভোলার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের টহলও বাড়ানো হয়েছে। পাশ্ববর্তী জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার। এছাড়া বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।   

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গেল শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ নামের এক যুবক বোরহানউদ্দিন থানায় একটি জিডি করতে আসেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার ফেইসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে।

এদিকে সেই আইডি থেকে পরিচিতদের ম্যাসেঞ্জারে ‘নবীকে নিয়ে কটূক্তি’ করা হচ্ছে- এমন একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খুব অল্প সময়েই এ নিয়ে বোরহানউদ্দিনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

এরপর শুভর বিচারের দাবিতে রোববার বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে ‘মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

রোববার বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহত হন, আহত হন ১০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক।

পুলিশ সদরদফতর থেকে বলা হয়েছে, সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের দিকে গুলিও ছোড়া হয়েছে; তাতে একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে যে চারজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজনের মাথা ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে থেঁতলানো ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন