১১ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী যাবে জাপানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪টি খাতে দক্ষ কর্মী পাঠাতে গত আগস্টে জাপানের সঙ্গে একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। যার ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটিতে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠানোর জন্য ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে সেন্ডিং অর্গানাইজেশন (এসও) হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণকারী এসও হিসেবে তালিকাভুক্তি অনুমোদনের বিষয়টি উল্লেখ করে সম্প্রতি রিক্রুটিং এজেন্সির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই তালিকায় এক বছরের জন্য ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠানোর জন্য এসও হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এজেন্সিগুলো জাপানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠাবে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হলো মেসার্স কেএম ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স আল খামিজ ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স গ্রিনল্যান্ড ওভারসিজ, মেসার্স দ্য হিউম্যান রিসোর্স বাংলাদেশ, মেসার্স প্রোসার্চ রিক্রুটমেন্ট কনসালট্যান্টস, মেসার্স আহম্মদ অ্যান্ড কোম্পানি, মেসার্স শুভ্র ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ট্রাভেলস, মেসার্স মিতুল ট্রেডিং, কেয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স এসএ ট্রেডিং মেসার্স গ্লোবাল রিক্রুটিং এজেন্সি।

প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাপান দুটি ক্যাটাগরিতে আগামী পাঁচ বছর কেয়ার ওয়ার্কার, বিল্ডিং ক্লিনিং ম্যানেজমেন্ট, মেশিন পার্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, কনস্ট্রাকশন, জাহাজ শিল্প, অটোমোবাইল, কৃষিসহ ১৪টি খাতে বিশেষভাবে দক্ষ জাপানি ভাষায় পারদর্শী

কর্মীদের নিয়োগ প্রদান করবে। প্রথম ক্যাটাগরির কর্মীরা জাপানি ভাষার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করলে পরিবার ছাড়া জাপানে পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পাবেন। আর দ্বিতীয় ক্যাটাগরির আওতায় যাদের জাপানি ভাষা নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা রয়েছে তারা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবেন এবং পরিবারকে সঙ্গে রাখতে পারবেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার জাপানের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে দক্ষ কর্মী তৈরিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সারা দেশে ২৬টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জাপানি ভাষার চার মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও জাপানি ভাষাশিক্ষার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের উদ্দেশে কর্মীরা গেলেও জাপানে সে সুযোগ ছিল না। ২০১৫ সালে জাপান পাঁচ বছরে শিল্প-কারখানা, নির্মাণকাজ, সেবাদানকারীসহ ১৪টি খাতে সাড়ে তিন লাখ দক্ষ জনশক্তি আমদানির ঘোষণা দেয়। দক্ষতার অভাব জাপান সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ না দেয়ার কারণে বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার এতদিন বাংলাদেশ ধরতে পারেনি। তবে দেশটির বিশেষায়িত সংস্থাইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএম) জাপান’-এর সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সমঝোতার মাধ্যমে গত বছর সীমিত পরিসরে কিছু কর্মী যাওয়া শুরু করেছে। ২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থায় বাংলাদেশ থেকে ১৬৩ জন জাপানে কাজের উদ্দেশ্যে গেছেন। বছরের গত আট মাসে গেছেন প্রায় ১০০ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন