ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থার (উয়েফা) অর্থায়নে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৬ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মালদ্বীপকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে স্বাগতিক কিশোররা।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মালদ্বীপের দুই কোচ ও এক ফুটবলার লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তার আগেই একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে ফেলে লাল-সবুজরা। ম্যাচের প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। চমত্কার দলগত সমন্বয়ে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে গোল উত্সবের সূচনা হয়। ম্যাচের শেষ বাঁশি পর্যন্ত সে আধিপত্য ধরে রাখে বাংলাদেশ।
চার জাতির আসরে ইউরোপের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে ফারো আইল্যান্ড। এশিয়ার আসিয়ান অঞ্চল থেকে অংশগ্রহণ করে কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ ছাড়া এ আসরে অংশ নেয় দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী মালদ্বীপ। দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফার উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করল বাংলাদেশ। এটিই লাল-সবুজদের প্রথম শিরোপা।
কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে প্রতিযোগিতা শুরু স্বাগতিকদের। পরের ম্যাচে ফারো আইল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারায় লাল-সবুজরা। রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারী দলগুলো একে অপরের সঙ্গে খেলার পর সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করা দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নিয়ম। সে হিসেবে শেষ ম্যাচে মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু ম্যাচে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে শতভাগ জয় নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। গতকাল দিনের আরেক ম্যাচে কম্বোডিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েও রানার্সআপ ট্রফিতে সান্ত্বনা খুঁজতে হয়েছে ফারো আইল্যান্ডকে।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলমুখে দ্রুত পাস খেলে রক্ষণে ফাটল ধরায় বাংলাদেশ। মঈনুল ইসলামের ক্রস থেকে সাজেদ ইসলাম ইমনের হেডে গোলের খাতা খোলে বাংলাদেশ (১-০)। ১৪ মিনিটে প্রতিপক্ষ সীমানায় বল ধরা ইমন একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলে শট নেন। বল এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক পাল্টালে মালদ্বীপ গোলরক্ষক বিভ্রান্ত হয়ে উল্টো দিকে ঝাঁপান; বল গড়িয়ে জালে জড়ালে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় বাংলাদেশের (২-০)।
২৩ মিনিটে ডানদিক থেকে মঈনুল ইসলামের করা কর্নারে অপূর্ব মালির হেড গোলরক্ষকের হাতে লেগে জালে জড়ালে স্কোরলাইন ৩-০ হয়। ৩৬ মিনিটে ডানদিকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে কাটব্যাক করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, তা এক সতীর্থের পা ঘুরে আসে মঈনুল ইসলামের কাছে। তার প্লেসিংয়ে আরেকবার উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ শিবির। ৪-০ গোলের লিড ধরে রেখেই মাঝবিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
বিরতির পরও দাপট অব্যাহত থাকে। এ সময় বাংলাদেশের আক্রমণ রুখতেই ব্যস্ত ছিল মালদ্বীপ রক্ষণ। তাতে অবশ্য ঠেকানো যায়নি লাল-সবুজদের। বিরতির পর সপ্তম মিনিটে আরেক গোল করে বাংলাদেশ। এবার পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করেন মঈনুল ইসলাম (৫-০)। ৮৬ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন করেন এ ফরোয়ার্ড। এবার বাংলাদেশের আক্রমণ মালদ্বীপ রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর বক্সে বল ধরেন মঈনুল ইসলাম। জোরালো শটে গোলরক্ষককে কোনো সুযোগই দেননি এ ফরোয়ার্ড (৬-০)। এটি ছিল দলের ষষ্ঠ গোল। শেষ পর্যন্ত ৬-০ গোলের জয়েই শিরোপার উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা।
