রাজবাড়ীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো শতাধিক। অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য যানবাহনের বেপরোয়া গতি মাদকসেবী চালককে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে মাঠে নামছে হাইওয়ে পুলিশ।

রাজবাড়ীর আহলাদিপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে হাইওয়ের অধীনের থাকা সড়কে আটটি দুর্ঘটনায় মোট ১২ জন নিহত হন। এছাড়া বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে নয় মাসে দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন।

বছর মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল, ফিটনেস না থাকা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে হাজার ১৩৯টি মামলা করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সরেজমিন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ী সদর উপজেলার নিহাজ জুট মিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সকাল থেকে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল গোপনে স্পিডগান দিয়ে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি পরীক্ষা করছে। অতিরিক্ত গতি থাকলেই দেয়া হচ্ছে মামলা। পাশেই আরএফআইডি মেশিন দিয়ে গাড়ির কাগজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। যন্ত্রটিতে শুধু গাড়ির নম্বর সংযুক্ত করলেই গাড়ির সব তথ্য দেখা যাচ্ছে। এতে সময় লাগছে মাত্র মিনিট।

এছাড়া যানবাহনের চালকরা মাদকসেবী কিনা, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে অ্যালকোহল ডিটেক্টর দিয়ে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জানা যাচ্ছে চালক মাদকসেবী কিনা।

সময় গোয়ালন্দ মোড় এলাকার বাসিন্দা নজুরুল ইসলাম জানান, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে গোয়ালন্দ মোড়ের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। ঢাকায় আসতে বা দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় যেতে ব্যবহার করতে হয় মহাসড়কটি। প্রতিদিন খুলনা, যশোর, বরিশাল, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জসহ ২১ জেলার পাঁচ-ছয় হাজার ছোট-বড় যানবাহন মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে।

তিনি আরো জানান, গোয়ালন্দ মোড় পার হওয়ার পরই ফেরির সিরিয়াল পেতে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালান চালকরা। যে কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। হাইয়ে পুলিশের এমন অভিযান নিয়মিত থাকলে কমে যাবে সড়কে মৃত্যুর মিছিল।

মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের যাত্রী অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে প্রতিটি সেক্টরে, তারই নমুনা এসব যন্ত্রের ব্যবহার। এমন ভালো উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাগজপত্র পরীক্ষায় খুশি চালকরাও। ফরিদপুর থেকে ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসের চালক আমজাদ হোসেন মোল্লা জানান, একসময় গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে সময় লাগত ২০-২৫ মিনিট; এখন তা মিনিটেই হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া যেভাবে মাদকসেবী পরীক্ষা করা হচ্ছে, তাতে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। সড়কে শৃঙ্খলাও ফিরে আসবে।

রাজবাড়ী জেলার আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ ভুইয়া জানান, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে আমরা তিন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করছি। এর মধ্যে অ্যালকোহল ডিটেক্টর দিয়ে মাদক পরীক্ষা, আরএফআইডি মেশিন দিয়ে গাড়ির কাগজ পরীক্ষা স্পিডগান দিয়ে নিয়মিত গতি মাপা হচ্ছে। এতে একদিকে সময় কম লাগছে। অন্যদিকে যারা আইন মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন