দেশের বাইরে নিকেল মজুদ বাড়াচ্ছেন চীনা ব্যবসায়ীরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় গত মাস থেকেই চাঙ্গা নিকেলের বাজার। দাম বেড়ে যাওয়ায় লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) মজুদ নিকেল বিক্রি বেড়েছে। অবস্থায় এলএমইতে বেশি দামে ধাতুটি সরবরাহ করতে চীনের ব্যবসায়ীরা অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে কম দামে নিকেল কিনে এশিয়ার অন্য দেশগুলোয় মজুদ বাড়াচ্ছেন। খবর ব্লুমবার্গ।

দেশের বাইরে নিকেলের মজুদ বাড়ানোর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন এমন ব্যবসায়ী খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে চীনের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ থেকে ১৩ হাজার ৬০০ টন পরিশোধিত নিকেল অন্য দেশের ওয়্যারহাউজে মজুদ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব ব্যবসায়ী জানান, এলএমই বাজারে সহজেই সরবরাহ করার লক্ষ্যে চীনের বাইরে তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোয় নিকেলের মজুদ বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

চীনে নিকেল বিক্রিতে নগদ মূল্যছাড় প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এর ফলে দেশটি থেকে এলএমইর চেয়ে কম দামে ধাতুটির বেচাকেনা হচ্ছে। যে কারণে খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চীন থেকে করছাড়ে নিকেল কিনে এলএমইতে সরবরাহ করে প্রতি টনে ২০ থেকে ৫০ ডলারের মতো বাড়তি আয় করতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

বিশ্বের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া আগামী বছর থেকে নিকেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে করে সরবরাহ সংকটের আগাম আশঙ্কায় এলএমইতে ধাতুটির দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

এলএমই ওয়্যারহাউজগুলোয় মজুদ থাকা অর্ধেকেরও বেশি নিকেল গত মাসে উত্তোলন করেছেন ব্যবসায়ীরা। ধাতুটির স্পটমূল্য ১২ বছরের মধ্যে ভবিষাৎ মূল্যের তুলনায় সর্বোচ্চে রয়েছে। ফলে মজুদ নিকেল থেকে বিক্রি বেড়ে এলএমইতে ধাতুটির সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।

এলএমইতে প্রতি টন নিকেলের দাম সর্বশেষ শুক্রবার ১৬ হাজার ২৮০ ডলারে স্থিতিশীল হয়। যেখানে চলতি বছরের শুরুতে প্রতি টনের দাম ছিল ১০ হাজার ৬০৪ ডলার। যদিও সপ্তাহে ধাতুটির দাম কমেছে দশমিক শতাংশ। তবে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় এখনো দাম ৪২ শতাংশ বেশি রয়েছে। আর ইন্দোনেশিয়া থেকে রফতানি বন্ধের আশঙ্কায় গেল সেপ্টেম্বরে ধাতুটির দাম ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এমনকি আগামীতে ধাতুটির দাম আরো বাড়তে পারে এমন সম্ভাবনায় নিকেলের মজুদ বাড়িয়ে দিচ্ছেন অন্য দেশের ব্যবসায়ীরাও।

তবে মজুদ বাড়লে জাপানের হামানাকার মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। সে সময় দেশটির সুমিতোমো করপোরেশনে মজুদ বৃদ্ধির ফলে ধাতুটির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু ১৯৯৫ সালে এর বড় আকারের পতন ঘটে। ফলে ব্যবসায়ীরা বড় আকারে ক্ষতির সম্মুখীন হন, যা হামানাকা কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন