আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক সম্মেলন

প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় আর্থিক প্রধানদের

বণিক বার্তা ডেস্ক

আইসল্যান্ডের সমুদ্র পাড় থেকে জাপানের গাড়ি কারখানাগুলো পর্যন্ত সর্বত্রই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করা যাচ্ছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অনুষ্ঠিত শরত্কালীন বৈঠকেও বিশ্বের অর্থমন্ত্রী কেন্দ্রীয় ব্যাংকাররা ভুক্তভোগী অর্থনীতিগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গেঅত্যন্ত অনিশ্চিতভবিষ্যৎ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি পরিস্থিতির মধ্যে চাহিদাকে শক্তিশালী করতে রাজস্ব নীতিসহ নিজেদের সব ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। খবর ব্লুমবার্গ রয়টার্স।

গত শনিবার আইএমএফের ১৮৯টি সদস্য দেশের স্টিয়ারিং প্যানেলইন্টারন্যাশনাল মনিটারি অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল কমিটিরপক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যৎ অত্যন্ত অনিশ্চিত মন্দার ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতি অনিশ্চয়তা ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। ঝুঁকি প্রশমন, পরিস্থিতি সামলানোর সক্ষমতা প্রবৃদ্ধি বাড়াতে আমরা স্বতন্ত্র সম্মিলিতভাবে উপযুক্ত নীতিগুলো গ্রহণ করব, যাতে সবাই লাভবান হয়।

চাহিদা শক্তিশালী করতে রাজস্ব খাতে যতটা ছাড় দেয়া সম্ভব, ততটা দেয়া প্রয়োজন এবং মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি রাখতে বা সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথ মুদ্রানীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবারের সম্মেলনে অনেকেই ১৯৪০-এর দশকে আইএমএফ গঠনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি কতটা পরিবর্তিত হয়েছে, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, সে সময় বিশ্ব অর্থনীতি এক দশকের বেশি সময় ধরে উচ্চ শুল্ক বাধা, মহামন্দা যুদ্ধের আঘাতে জর্জরিত ছিল। সে পরিস্থিতিতে তত্কালীন মার্কিন অর্থমন্ত্রী হেনরি মরগেনথাউ একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়নে অগ্রবর্তী ভূমিকা পালন করেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র দুটি বার্তা দিয়েছিল, যার প্রথমটি ছিল সমৃদ্ধির কোনো সীমা নেই এবং দ্বিতীয়টি ছিল বিস্তৃতভাবে সমৃদ্ধির ভাগাভাগি সবার জন্যই লাভজনক।

মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্যযুদ্ধ সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধগুলোর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে, এতে সবারই ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যেখানেই সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানেই মুদ্রানীতিসহ সব ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে হবে। মন্দা রোধ বা এর গতি কমাতে সরকারগুলোকেই এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বিশ্বের বৃহত্তম রফতানিকারক চীনের সঙ্গে ১৫ মাস আগে একটি তিক্ত শুল্কযুদ্ধ শুরু করে বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনের সিংহভাগ শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছেন।

নিম্নমুখী প্রবণতার ফলে টানা পঞ্চমবারের মতো চলতি বছরের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি শতাংশ সম্প্রসারিত হতে পারে, যা ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে দুর্বল সম্প্রসারণ। এর আগে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ সতর্ক করে বলেছিলেন, নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এখন আর ভুল করার কোনো সুযোগ নেই এবং বাণিজ্য ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে নীতিনির্ধারকদের জরুরিভিত্তিতে একত্রে কাজ করা প্রয়োজন।

কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অবনতিতে সব দেশ সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। বিশাল স্থানীয় ভোক্তা ব্যয় ভিত্তি থাকার কারণে রফতানির পতনের মধ্যে বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে তুলনামূলক কম ক্ষতির মুখে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিশনার পিয়েরে মস্কোভিচি বলেন, রফতানির ওপর নির্ভরশীল বাণিজ্য উন্মুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোতে বিশেষভাবে ক্ষতি অনুভব করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছর জার্মানির জিডিপির ৪০ শতাংশের বেশি এসেছে রফতানি থেকে, যা বিশ্বের যে কোনো প্রধান অর্থনীতির চেয়ে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন