ই-গভর্নমেন্ট সূচকে সেরা ৫০- এ থাকতে চায় সরকার: সজীব ওয়াজেদ জয়

বণিক বার্তা অনলাইন

ডিজিটাল সেবার বিস্তৃতি ও উন্নতি ঘটিয়ে বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স উন্নয়ন সূচকে সেরা ৫০টি দেশের তালিকায় আসার প্রত্যাশা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

আজ রবিববার সকালে রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান রিপোর্ট প্রকাশ ও এটুআইয়ের তিনটি নাগরিক সেবা উদ্বোধন করতে এসে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ‘ই-গভর্নমেন্ট মাস্টারপ্ল্যান’ রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচনের পাশাপাশি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিসেস সিস্টেম’, ‘একসেবা’, ‘একপে’ এবং ‘একশপ’ এরও উদ্বোধন করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। 

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু ক্যাং ইল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ১০ বছর আগে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম। তখন অনেকেই বুঝতে পারেনি যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ কী? তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা তাদের ভুল প্রমাণ করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। আজ যা দেখছেন তা ডিজিটাল বাংলাদেশের সামান্য কিছু। আরও অনেককিছু আমরা করেছি এবং সামনে করবো।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করা সরকারি সেবাগুলো সম্পর্কে জয় বলেন, এই পাইলট প্রজেক্ট দিয়ে প্রায় ২০ লাখ নাগরিককে সেবা দেওয়া হবে। ২০২০ সালের মধ্যে ৩০০ মিউনিলিপালিটিকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এখানে আরও ডিজিটাল সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত হবে। ২০২১ সালের মাঝে দেশের অধিকাংশ নাগরিক অধিকাংশ সেবা তাদের হাতের নাগালেই পাবেন; যেগুলো পাওয়া যাবে না সেগুলো আমাদের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে নিতে পারবেন।

এসময় বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের আইসিটি ইন্ডিকেটর ডিজিটাল গভর্নেন্স ইনডেক্সের সেরা ৫০ এর মধ্যে আসার প্রত্যাশার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘গত কবছরে আমরা (ডিজিটাল গভর্নেন্স ইনডেক্সে) ৪০-৫০ ধাপ এগিয়েছি। আগামী ৫ বছরে আমরা কেন আরও ৫০ ধাপ এগোব না?’

২০১৮ সালের জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স সার্ভে প্রতিবেদনে, ই-গভর্ন্যান্স ডেভেলপমেন্ট সূচকে ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে বংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। এই সূচকে সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে ডেনমার্ক ও সর্বনিম্ন অবস্থানে সোমালিয়া। দুই বছর পর পর এই জরিপ চালায় জাতিসংঘ।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার ১০ বছর পরে ই গভর্নমেন্ট মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ণ করেছে আইসিটি বিভাগ। সজীব ওয়াজেদ জয় এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন ১০ বছর পরে আমরা এরকম পরিকল্পনা কেন করছি, এতদিন পরে কেন? আমরা যখন শুরু করি তখন কোনো কিছুই ডিজিটাইডজ হয়নি। আইসিটির ফান্ডামেন্টাল ডিজিটাল সার্ভিস, ডেটাবেইজ, স্থাপনা কিছু হয়নি। দশ বছর আগে করলে তা অফলদায়ী চর্চাই হতো।’

ডিজিটাল সেবাগুলো সম্পর্কে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থায় এগিয়ে যেতে হলে দরকার সময় এবং অর্থের ব্যয় কমিয়ে আনা। তার জন্যই এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর উদ্যোগে আমরা করেছি একশপ, একপে এবং একসেবা। 

তিন বলেন, ‘একসেবায় এখন পর্যন্ত ১৬২টি সরকারি সেবা আছে। নাগরিকদের ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বা ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইটেও যেতে হবে না। এখান থেকেই এসব সেবা পাবেন। পর্যায়ক্রমে এতে আরও তিন হাজার সেবা অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য আছে আমাদের। একপে-এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবার বিল ও অন্যান্য ফি এক জায়গা থেকেই দেওয়া যাবে। আর একশপ এর মাধ্যমে দেশের আনাচে কানাচে থেকে পণ্য উৎপাদক বা উদ্যোক্তারা ই-কমার্সে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবে।’

প্রসঙ্গত, এসব সেবা পরীক্ষামূলকভাবে ১০টি মিউনিসিপাল অঞ্চলে (সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা) শুরু করা হয়েছে। ৩২৯টি মিউনিসিপাল অঞ্চলকে এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

অনুষ্ঠানে ১০০ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন